দোয়া কবুল হওয়ার সূরা
দ্রুত দোয়া কবুলের আমল
আল কুরআনে মহান আল্লাহ পাক বলেন,'আমার বান্দা যখন আমার কথা জিজ্ঞেস করে তখন আমি অবশ্যই তার নিকটে থাকি। তলবকারী আমাকে ডাকলে আমি তলবকারীর ডাকে সাড়া দেই। তাই তারা আমার ডাকে যেনো সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ইমান আনয়ন করে। আশা করি তারা সঠিক পথে থাকবে। "(কুরআন: বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আলকুরআন থেকে জানা যায়,
বান্দা যদি সঠিক উপায়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, আল্লাহ তা কবুল করেন। কিন্তু কখনও
কখনও দুয়ার ফলাফল তাৎক্ষণিক হয়। এভাবে মানুষের জন্য অনেক মঙ্গলময় হয়ে থাকে। মানুষের দোয়া
তৎক্ষণাৎ কবুল না হওয়ার দুটি কারণ এখানে আলোচিত হলো।
সাথে সাথে আমাদের দোয়া কবুল করেন না কেন আল্লাহপাক?
আরও ভালো কিছু দেবেন হয়তো; কখনো কখনো দুয়ার ফল দুনিয়ায় অদৃশ্য থাকে। কিন্তু এর বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা মানুষকে বেশি উত্তম প্রতিদান দেন। সে প্রার্থনায় যা চায় তা হয়তো তাকে সাময়িক দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচাতে পারে; কিন্তু মহান আল্লাহ তাকে সাময়িক সুখী না করে, স্থায়ী সুখের ব্যবস্থা করেছেন।
আত্তা ইবনু আবূ রাব্বা (রাঃ) বলেন, ইবনে আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে বেহেশতী একজন মহিলা দেখাব না? আমি বললাম, অবশ্যই। অতঃপর তিনি বললেন, এই কালো মহিলা, সে নবী (সাঃ) এর কাছে এসেছিল।
তারপর বললেন, আমার মৃগী রোগ আছে এবং আমার গোপনাঙ্গ উন্মুক্ত হয়ে যায় ঔসময়। তাই আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি ইচ্ছা করলে ধৈর্য ধরতে পারো।
তাহলে তুমি বেহেশত পাবে। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে তোমাকে সুস্থ করার
জন্য প্রার্থনা করি। মহিলা বললেন, না আমি ধৈর্য ধরব। মহিলা বলেন, ঔসময় আমার গোপনাঙ্গ
উন্মুক্ত হয়ে যায় যখন মৃগী রোগটি ওঠে, তাই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন যে, আমার গোপনাঙ্গ
যেন উন্মুক্ত না হয়। রাসূল (সাঃ) তার জন্য দোয়া করলেন। (বুখারীঃ ৫৬৫২)
পৃথিবী মানুষের জন্য একটি পরীক্ষাগার
পৃথিবী যেহেতু একটি পরীক্ষাগার, এবং সমস্ত ধরণের বিপদ এবং পরীক্ষা মানুষের উপর আসতেই পারে। তাই কখনো কখনো আল্লাহতায়ালা এই বিষয়গুলোর উপর অবিলম্বে দুয়ার ফল দেন না।
সাদ (রাঃ) তার পিতার কর্তৃত্বে বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেন, আমি আমার রবের কাছে তিনটি জিনিস প্রার্থনা করেছি। এর মধ্যে তিনি আমাকে দুটি দিয়েছেন এবং একটি দেননি।
নবীজী সাঃ এর কোন দুয়া আল্লাহপাক কবুল করেননি
তাই মহান আল্লাহ পাক দুনিয়ায় মাঝে মাঝে মানুষের দোয়ার ফলাফল সাথে সাথে দেন না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহপাকের কাছে আমি তিনটি বিষয়ে দোয়া করেছিলাম আমার উম্মতের জন্য। তার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক দুটি বিষয় কবুল করেছেন এবং একটি বিষয় কবুল করেন নি।
আল্লাহ পাকের কাছে আমি দোয়া করেছিলাম যেন আমার উম্মতগণ খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে শেষ হয়ে না যায়। মহান আল্লাহপাক আমার এই দোয়া কবুল করেছেন।
আমি আরো একটি বিষয় দোয়া করেছিলাম যে, হে আল্লাহ আপনি আমার উম্মত কে জলে ডুবিয়ে শেষ করে দিয়েন না; মহান আল্লাহপাক আমার এই প্রার্থনাও মঞ্জুর করেছেন।
কিন্তু আমার আরো একটি দোয়া ছিল যে মুসলমানরা যেন নিজেরা পরস্পর দ্বন্দ্ব ও অপকর্মে বা যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে পড়ে। মহান আল্লাহতায়ালা আমার এই দোয়াটি মঞ্জুর করেন নি । (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫২)
ফলে আমাদের কর্তব্য হলো
দোয়া করা এবং সেই দোয়ার রেজাল্ট সাথে সাথে না পেলেও মহান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে নিয়মিত দোয়া করে যাওয়া উচিত। দুনিয়াতে না পেলেও আখেরাতে আমরা এর ফলাফল পাব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ পাক আমাদের দোয়া কবুল করুন আমীন।
অনলাইন থেকে সংগৃহীত