স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম
স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম
তালাক শব্দের অর্থ হলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বা আলাদা হয়ে যাওয়া বুঝায়। তালাকের (talak)
মাধ্যমে একজন স্বামী বা স্ত্রী তাদের বৈবাহিক জীবন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া বুঝায়। ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিবাহ হয়ে থাকে এবং এই ইসলামী বিধান মতেই তালাকও হয়ে থাকে। নিচে আমরা তালাকের বিধি বিধান সম্পর্কে জানতে পারবো।
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় তাঁর স্ত্রীকে ঋতুমতী অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমর ইবনুল খাত্তাব রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
আল্লাহর রাসূল (সা.) বললেন, তাকে নির্দেশ দাও যে, সে তাকে ফিরিয়ে নেবে এবং তাকে ধরে রাখবে, যতক্ষণ না সে নির্দোষ প্রমাণিত হয় এর পরে, তিনি তার পরবর্তী পিরিয়ড পর্যন্ত ধরে রাখেন, এবং যদি সে তাকে তালাক (talaq) দিতে চায় তবে সে তার সাথে সহবাস করার আগে তাকে তালাক দিতে পারে;
আর এটাই হল সেই নির্ধারিত সময় যা আল্লাহ তালাক দেওয়ার জন্য নারীদের জন্য নির্ধারণ করেছেন।" আল কুরআন বিয়ে শুধুমাত্র একটি সামাজিক প্রথা বা রীতি নয়, একটি মহৎ ইবাদতও বটে। অন্যান্য শরিয়া আইনের মতো বিবাহও ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন।
স্ত্রী তালাকের ইসলামী বিধান কি?
একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যদি কেউ এটিকে অপব্যবহার করে বা ভুলভাবে প্রয়োগ করে তবে এটি অত্যান্ত পাপ হবে। তাই তালাক বা অনুরূপ শব্দ উচ্চারণ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক বিচক্ষণ স্বামীর কর্তব্য। স্বামীদের যেমন চরম প্রয়োজন ছাড়া তালাক দেওয়ার অনুমতি নেই, তেমনি স্ত্রীদেরও।
কিন্তু বর্তমান সমাজে অনেকে না বুঝেই ডিভোর্স (divorce) দিয়ে থাকে। কিন্তু তালাক হল ইসলামের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ধরনের হালাল জিনিস। তাই বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং ইসলামের সঠিক নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
তালাক দেওয়ার নিয়ম
Divorce Rules
হাদিস শরিফে বলা হয়েছে: "তালাক হল আল্লাহর কাছে সকল হালাল কাজের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য হালাল কাজ।" (আবু দাউদ: হাদিস: ২১৭৮)
তালাক নামার বিধান?
যখন তালাকের কথা আসে, তখন অনেকেই সঠিক শর্তাদি না জেনে বা শরিয়া আইনের বিধান না বুঝেই তালাকের কথা বলে থাকেন। এ প্রসঙ্গে মুফতি তৈয়ব আহমদ বলেন, প্রথমত, তিন তালাক না। স্বামী এক তালাক দিতে স্পষ্টভাবে সম্মত হবেন।
এরপর স্বামী স্ত্রীকে তার ইদ্দত চলাকালীন ফিরিয়ে আনলে উত্তম হবে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে এক্ষেত্রে। আবার বিয়ে করার দরকার নেই। যেখানে ইদ্দত চলাকালীন সময়ে স্বামী স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নিলে ইদ্দত (ত্রিমাসিক বা তিন মাস) শেষ হলে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। স্ত্রী স্বামী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
কিন্তু এক তালাকের পরও যদি
তারা উভয়েই পূর্বের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অনমনীয় হয়, তাহলে দ্বিতীয় তালাক দেওয়া হবে, তারপর তৃতীয় তালাক দেওয়া হবে। যদি তৃতীয় তালাকের পর এই স্ত্রী গ্রহণ করা হয়, তবে সে তার দ্বিতীয় বিবাহ এবং সেই স্বামীকে পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত গ্রহণ করতে পারবে না।
ইসলামে একই সাথে তিন তালাক দেওয়ার বিধান নেই।
তাই হায়েজের পর প্রত্যেক পবিত্রতার সময় বা মাসিকের পর এক তালাক আদায় করা হবে এবং তিন তালাক দেওয়া হবে। এভাবে তিন তালাকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যাবে উভয়ে। এটাই ইসলামের বিধান যা আমাদের সকলকে মেনে চলতে হবে ইনশাআল্লাহ্।
ডিভোর্স দিতে কত টাকা লাগে?
ডিভোর্স বা তালাক দিতে হলে মেয়ের সম্পূর্ণ দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে তালাক হবে না বলে ইসলামী শরীয়াতে জানা যায়।
তালাকের কতদিন পর বিয়ে করা যায়?
তালাক দেওয়ার পর আবার বিয়ে
তালাকের ৯০ দিনের মধ্যে যদি স্বামী তার ভুল স্বীকার করে বিবাহ রেজিস্ট্রি অফিসে আবেদন করে তাহলে তার স্ত্রীকে সে পুনরায় ফিরিয়ে নিতে পারবে এবং সংসার করতে পারবে বাংলাদেশের বিবাহ ও পরিবার আইনে এটাই পাওয়া যায়।
পোস্ট ট্যাগঃ
স্ত্রী তালাক দেওয়ার নিয়ম
স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম
ইসলামে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দেওয়ার নিয়ম
স্ত্রী তালাকের নিয়ম
স্ত্রী তালাক
স্ত্রীকে তালাক
স্ত্রী যদি তালাক দেয়