তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
নিম্নলিখিত
যে কোন অবস্থায় আমরা
তায়াম্মুম করে সালাত আদায়
করতে পারি।
তায়াম্মুম কখন করা যাবে
- ১) মোটেই পানি পাওয়া না গেলে।
- ২) প্রাপ্ত বা মওজুদ্ পানি যথেষ্ট না হলে (অর্থাৎ কেবল পান করার জন্যে যথেষ্ট হলে এবং পান করা ও ওযু' করা উভয় কাজের জন্যে যথেষ্ট না হলে)।
- ৩) পানি ব্যবহার করা ক্ষতিকর হলে (অর্থাৎ অসুস্থ অবস্থায়)।
নিম্নলিখিত নিয়মে
তায়াম্মুম্
করতে
হবে:
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
১) (ক) 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম্' বলে নিয়্যত করা,
(খ) এরপর আপনার উভয় হাত আলতোভাবে মাটি, বালি, পাথর বা ধুলাযুক্ত অন্য যে কোন বস্তুর ওপর রাখতে হবে।
২)
আপনার হাত ঝাড়া দিয়ে
আলগা ধুলা ফেলে দিন
এবং ওযু'র নিয়মে
একবার চেহারার ওপর উভয় হাত
বুলিয়ে নিন।
৩) ‘১-এর (খ)’-তে যা করেছেন তা পুনরায় করুন এবং বাম হাত দিয়ে ডান হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত ও ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত মুছে নাও। যে কারণে পুনরায় ওযু' করতে হয় একই কারণে তায়াম্মুমও ভঙ্গ হয় ও পুনরায় তায়াম্মুম করতে হয়।
এছাড়া যেসব কারণে তায়াম্মুম করা যায় সে কারণ দূর হয়ে গেলে (অর্থাৎ পানি পাওয়া গেলে বা যথেষ্ট পাওয়া গেলে অথবা রোগ ভাল হয়ে গেলে) তায়াম্মুম ভঙ্গ হয়ে যায়; অতঃপর সালাত আদায় করতে হলে ওযু' করতে হয়।
আযান বাংলাঃ (Azan time/Bangla)
আযান (সালাতের
জন্যে
আহ্বান)
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) যেমন বলেছেন তেমনি তাঁর কাজের মাধ্যমেও দেখিয়েছেন যে, মুসলিম পুরুষ ও বালেগ ছেলেদের জন্যে তাদের ফরয সালাত মসজিদে গিয়ে জামা'আতের সাথে আদায় করা উচিত। মহিলা ও বালিকারাও চাইলে মসজিদে গিয়ে তাদের সালাত আদায় করতে পারে। অন্য সব রকমের সালাত একা একা বাড়ীতে আদায় করা যায়।
মুসলমানদেরকে সালাতের দিকে
ডাকার জন্যে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)
আযানের প্রচলন করেন। 'আযান' (azan) মানে 'আহ্বান'। যিনি আযান
দেন তাঁকে 'মুআজ্জিন' (আহ্বানকারী) বলা হয়। আযান
দেয়ার সময় মুআজ্জিনকে কিবলার
দিকে (মক্কাহ্ নগরীর কা'বাহ্ গৃহের
দিকে) মুখ করে দাঁড়াতে
হয়। মুআযযিন তাঁর দুই হাত
কান পর্যন্ত উঁচু করে উঁচু
গলায় বলেন:
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
আশহাদু
আল্লা-ইলাহা- ইল্লাল্লাহ্! (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি
যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই)।
আশহাদু
আল্লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি
যে, আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই)।
আশহাদু
আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল)।
আশহাদু
আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল)।
হাইয়্যা
'আলাহ্ ছালাহ্ (সালাতের দিকে ছুটে এসো)
হাইয়্যা
'আলাহ্ ছালাহ্ (সালাতের দিকে ছুটে এসো)
হাইয়্যা
'আলাল ফালাহ্ (সাফল্যের দিকে ছুটে এসো)
হাইয়্যা
'আলাল ফালাহ্ (সাফল্যের দিকে ছুটে এসো)
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
আল্লাহু
আকবার (আল্লাহ্ সর্বশ্রেষ্ঠ!)
লা
ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ (আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই)
ফজরের
সালাতের আযানে “হাইয়্যা 'আলাল ফালাহ্” বলার
পরে নীচের কথাগুলো
অতিরিক্ত
বলতে হয়:
আছ্ছালাতু খাইরুম মিনান নাওম-ঘুমের চেয়ে
সালাত ভাল ৷
আছ্ছালাতু খাইরুম মিনান নাওম-ঘুমের চেয়ে
সালাত ভাল ৷
ইকামাত
আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময় কোনটি
মসজিদের
ভিতরে জামাআতে ফরয সালাত শুরু
করার ঠিক আগ মুহূর্তে
আযানের তুলনায় অপেক্ষাকৃত নীচু স্বরে সালাতের
জন্য যে আহ্বান জানানো
হয় তাকে ইকামাহ বলা হয়। মুছাল্লীগণ
(সালাত আদায়কারীগণ) যখন ফরয সালাত
আদায়ের জন্য কাতারবদ্ধ হয়ে
দাঁড়ায় তখন মুআজ্জিন ইকামাহ্
দেন ৷
ইকামাহ্
ও আযানের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য
নেই। তবে ইকামাতের সময়
“হাইয়্যা “আলাল ফালাহ্” বলার
পরে নীচের কথাটি বলতে হয়:
কাদ্
কামাতিচ্ ছালাহ্ (সালাত শুরু হচ্ছে)
কাদ্ কামাতিচ্ ছালাহ্ (সালাত শুরু হচ্ছে)
ফরয সালাত
একজন
মুসলমানের জন্যে দিনে পাঁচ ওয়াক্ত
সালাত আদায় করা বাধ্যতামূলক। আরবী
ভাষায় বাধ্যতামূলক সালাতকে বলা হয় ফরয
সালাত। সালাতের প্রতিটি একককে বলা হয় রাক'আহ্ বহুবচনে রাক্
আত্ বিভিন্ন ওয়াক্তের ফরয সালাতের রাক্আত্
সংখ্যা নীচে উল্লেখ করা
হল:
যোহরের নামাজ কয় রাকাত
সুন্নাত ৪ রাকাত, ফরজ ৪ রাকাত ও সুন্নাত দুই রাকাত। সর্ব মোট দশ রাকাত যুহরের নামাজের।
কোন নামাজ কত রাকাত
ফজর
২ রাকা আত্
যুহর
৪ রাকা'আত্
“আছর
৪ রাকা'আত
মাগরিব
৩ রাকা'আত্
'ইশা' ৪ রাকা'আত্
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি
মোট:
১৭ টি রাকা'আত
জুমু'আহ (শুক্রবার যুহরের
পরিবর্তে) ২ রাকা আত্
সুন্নাত সালাত
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বিভিন্ন ওয়াক্তে ফরয সালাতের সাথে অতিরিক্ত কয়েক রাক্ আহ্ সালাত আদায় করতেন। একে সুন্নাত সালাত বলা হয়। তিনি সব সময়ই ফজরের ওয়াক্তে ফরয সালাতের আগে দুই রাক্‘আহ্ ও ‘ইশা'র ওয়াক্তে ফরয সালাতের পরে তিন রাক্‘আত্ সালাত আদায় করতেন। এমনকি সফরের সময়ও তিনি এ সালাত বাদ দিতেন না।
“ইশা'র ফরয সালাতের পরবর্তী তিন রাক'আত সালাতকে 'বিতর (বেজোড়) সালাত বলা হয়। মুসলমানরা ফরয ও সুন্নাত সালাত ছাড়াও বিভিন্ন সময় আরো কয়েক রাক্‘আত্ সালাত আদায় করে থাকে। এধরনের সালাতকে নফল সালাত বলা হয়। নফল সালাত আদায় করা না-করা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন ব্যাপার।
দৈনিক
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ছাড়াও অন্যান্য উপলক্ষে আরো সালাত আদায়
করতে হয়। যেমন : প্রতি
শুক্রবার ছালাতুল জুমু'আহ, দুই
ঈদের সময় ছালাতুল ‘ঈদুল
ফিতর ছালাতুল ‘ঈদুল আয্হা এবং
রামাদান মাসের রাতে ছালাতুত্ তারাবীহ।
১
আছর ও ‘ঈশা’ ফরয
সালাতের পূর্ববর্তী এই সুন্নাত সালাত
হচ্ছে গায়েরে মুআক্কাদাহ (যা আদায় করার
জন্যে তাকিদ করা হয়নি) তাই
এ সালাত নিয়মিত আদায় করা হয় না,
মাঝে মাঝে আদায় করা
হয় ৷
২ ছালাতুল জুমু'আহ এর চেয়ে বেশী রাকা'আত ও পড়া যেতে পারে।
ওয়াজিব
কথাটি হানাফী ফিকাহতে এমন ধরনের বাধ্যতামূলক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয় যা ফরয-এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। হানাফী ফিকা অনুসারীরা ছালাতুল জানাযাহ্, ছালাতুল ‘ঈদুল ফিতর, ছালাতুল ‘ঈদুল আযহা ও ছালাতুল বিতরকে ওয়াজিব বলে গণ্য করে।
ছালাতুত্ তারাবীহ্ ‘ইশা'র দুই রাকা'আত্ সুন্নাত সালাতের পরে ও ছালাতুল বিতরের আগে আদায় করতে হয়।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এশার সালাতের পরে ও ফজরের সালাতের আগে এক ধরনের সালাত নিয়মিত আদায় করতেন। একে তাহাজ্জুদ সালাত বলা হয়। এ সালাত রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর জন্য বাধ্যতামূলক ছিল।
'মুত্তাকী (আল্লাহ্ প্রেমিক) মুসলমানগণ হযরত নবী করীম
(সাঃ)-এর অনুসরণে নিয়মিত
এ সালাত আদায়ের চেষ্টা করেন। বস্তুতঃ যেসব লোক আল্লাহ্
তা'আলার সাথে ঘনিষ্ঠ
হবার আনন্দ লাভে আগ্রহী কেবল
তাঁরাই তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের মাধ্যমে এ থেকে কল্যাণ
হাছিলের চেষ্টা করেন। যে সময় সালাত
আদায় করা অনুচিত:
সালাতের নিষিদ্ধ সময় কয়টি
নিম্নলিখিত
কয়েকটি সময়ে সালাত আদায় করা থেকে বিরত
থাকা উচিত:
- ১। সূর্যোদয়ের শুরু থেকে সূর্য পুরোপুরি উঠার পর ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত।
- ২। সূর্য পুরোপুরি মধ্য আকাশে থাকাকালে।
- ৩। সূর্যাস্ত শুরু হওয়ার সময় থেকে সূর্য পুরোপুরি অস্ত যাওয়া পর্যন্ত ।
- ৪। মহিলাদের জন্য মাসিক ঋতুস্রাব চলাকালে এবং সন্তান জন্মদানের পর যে রক্তপাত হয় তা চলাকালে সর্বোচ্চ ৪০ দিন পর্যন্ত, সালাত আদায় করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ ।"