আবু বকর রাঃ এর ঘটনা
সামনে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দেয় তা হচ্ছে, এখন উম্মাহকে নেতৃত্ব দেবেন কে? এ সময়ে মদীনার মাসজিদুন্ নাববীতে উপস্থিত সকলের মনেই এ প্রশ্নটি জেগেছিল। এটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ কোন জনগোষ্ঠী নেতা ছাড়া চলতে পারে না। নেতৃত্ব ছাড়া একটি জনগোষ্ঠী অসংগঠিত ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। ফলে এরূপ জনগোষ্ঠী উন্নতি-অগ্রগতির সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে।
প্রকৃত পক্ষে নেতৃত্বের বিষয়টি এতই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, হযরত রাসূলূল্লাহ (সাঃ)-এর পবিত্র লাশ দাফন করার আগেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। মুসলিম উম্মাহর নেতা নির্বাচনের ব্যাপারে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ছাহাবীদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এরপর সর্বসম্মতভাবে
হযরত
আবু
বকর
(রাঃ)-কে মুসলিম উম্মাহর
নেতা নির্বাচিত করা হয়। তিনি
হলেন মুসলমানদের প্রথম খলীফাহ। খলীফাহ মানে ‘উত্তরাধিকারী' বা 'স্থলাভিষিক্ত'।
মুসলিম উম্মাহর নেতা ও শাসক
হিসেবে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর উত্তরাধিকারী ও
স্থলাভিষিক্ত বিধায় তাঁকে খলীফাহ বলা হয়। আর
নিঃসন্দেহে হযরত আবু বকর
(রাঃ) এ দায়িত্বের জন্যে
যথাযথ ব্যক্তি ছিলেন।
মুসলিম
উম্মাহর এ সংকটময় মুহূর্তে
হযরত আবু বকর (রাঃ)
ছাড়া আর কার পক্ষে
উম্মাহকে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব ছিল? তিনি ছিলেন
হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ঘনিষ্ঠতম
বন্ধু। তিনি হযরত রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)-এর সহকারী ছিলেন
এবং তাঁর অসুস্থতাকালে সালাতের
জামা'আতে ইমামতী করেন।
একাদশ
হিজরীর ১৩ই রাবী'উল
আউয়াল খলীফা নির্বাচনের পর হযরত রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)-এর পবিত্র লাশ
দাফন করা হয়।
হযরত আবু
বকর
(রাঃ)-এর
মূল
নাম
‘আবদুল্লাহ
তাঁকে
আছ্-ছিদ্দিক্ বা ‘সত্যকে প্রত্যয়নকারী'
খেতাব দেয়া হয়। তাঁর পিতার
নাম ছিল ওছমান তবে
তিনি আবু কুহাফাহ নামেই
সুপরিচিত ছিলেন। তাঁর মায়ের নাম
ছিল সামা; ডাকনাম উম্মুল খায়ের। তিনি হযরত মুহাম্মাদ
(সাঃ)-এর চেয়ে আড়াই
বছরের ছোট ছিলেন।
হযরত
আবু বকর (রাঃ) খলীফা
নির্বাচিত হবার পর সমবেত
মুসলিম জনগণের উদ্দেশে যে ভাষণ দেন
তাতে তিনি বলেন,
“হে
জনগণ! আমি আপনাদের দ্বারা
আপনাদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত
হয়েছি যদিও আমি আপনাদের
কারো তুলনায় অধিকতর উত্তম নই। আমি যদি
ভাল কাজ করি, আপনারা
আমাকে সহায়তা করবেন, আর যদি কোন
ভুল করি তো আমাকে
সঠিক পথে নিয়ে আসবেন।
শুনে রাখুন, সত্যই হচ্ছে ন্যায় এবং অসত্যই অন্যায়।
আপনাদের
মধ্যে যারা দুর্বল, যতক্ষণ
না আমি তাঁদের প্রাপ্য
প্রদান করব, ততক্ষণ তাঁরাই
আমার দৃষ্টিতে শক্তিশালী। আর আপনাদের মধ্যে
যারা শক্তিশালী, যতক্ষণ না আমি তাঁদের
কাছ থেকে অন্যদের প্রাপ্য
আদায় করে নেব, ততক্ষণ
তাঁরাই আমার দৃষ্টিতে দুর্বল।
মনোযোগ
দিয়ে শুনুন, লোকেরা যদি আল্লাহর রাস্তায়
সংগ্রাম করা ছেড়ে দেয়
তাহলে আল্লাহ্ তাদের ওপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে
দেবেন। কোন জনগোষ্ঠী যদি
পাপাচারী হয় তাহলে আল্লাহ্
তাদের ওপর দুর্যোগ চাপিয়ে
দেবেন।
আমি
যতক্ষণ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের
আনুগত্য করব ততক্ষণ আপনারা
আমার আনুগত্য করবেন। আমি যদি আল্লাহ্
ও তাঁর রাসূলকে অমান্য
করি, তাহলে আপনারাও আমাকে অমান্য করার ব্যাপারে স্বাধীন।”
হযরত
আবু বকর (রাঃ) লোকদেরকে
কেবল তখনই তাঁর আনুগত্য
করতে বলেন যখন তিনি
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের
(সাঃ) আনুগত্য করেন। এমনই ছিলেন মুসলমানদের
প্রথম খলীফা। বাস্তবিকই, আমরা যদি হযরত
আবু বকরের (রাঃ) মত নেতা
পেতাম তাহলে এ পৃথিবী বসবাসের
জন্যে অধিকতর উত্তম জায়গায় পরিণত হত।
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বন্ধুদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতকালে তিনি তাঁর সাথে ছিলেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি ছিলেন খুবই দয়ালু এবং অন্যদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করতেন।
তিনি বহু ক্রীতদাসকে আযাদ
করে দেন। এদের মধ্যে
হযরত বিলাল বিন রাবাহ্, হযরত
'আম্র্ বিন্ ফুহাইরাহ, হযরত
উম্মে উবাইস্, হযরত যিনিরাহ, হযরত
নাহ্দীয়াহ ও তাঁর কন্যা
(রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আন্হুম্
ওয়া ‘আনহুন্না) ছিলেন অন্যতম। হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
কাফিরদের বিরুদ্ধে যে সব যুদ্ধে
অংশগ্রহণ করেন তিনিও সেসব
যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
হযরত
আবু বকর (রাঃ) অন্য
যে কোন কিছুর তুলনায়
তাঁর ঈমানকে বেশী ভালবাসতেন। বদরের
যুদ্ধে তাঁর পুত্র 'আবদুর
রহমান কাফিরদের পক্ষে লড়াই করেছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর হযরত আবদুর
রহমান বিন আবু বকর
(রাঃ) একদিন তাঁর পিতাকে বললেন;
“হে আমার পিতা! বদরের যুদ্ধে দু'দুইবার আপনি আমার তলোয়ারের আওতায় এসে গিয়েছিলেন, কিন্তু আপনার প্রতি আমার মহব্বত আমার হাতকে (আপনাকে হত্যা করা থেকে) ফিরিয়ে রেখেছিল।”
এ কথার জবাবে
হযরত আবু বকর (রাঃ)
বললেন: “হে আমার পুত্র!
আমি যদি কেবল একবার
তোমাকে আমার তলোয়ারের আওতায়
পেতাম তা হলে আর
তুমি বেঁচে থাকতে না।” হযরত আবু
বকর (রাঃ) ঈমানে এমনই
আপোষহীন ছিলেন!
তাবূকের
যুদ্ধের সময় হযরত আবু
বকর (রাঃ) তাঁর সকল
ধনসম্পদ যুদ্ধতহবিলে দান করেন। হযরত
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন জিজ্ঞেস
করলেন: “তুমি তোমার পরিবারের
জন্য কি রেখে এসেছ?”
তখন তিনি জবাব দেন:
“আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে।”
বাস্তবিকই এটা ছিল ত্যাগের
এক বিরল দৃষ্টান্ত!
হযরত রাসূলুল্লাহ
(সাঃ):
Hazrat Rasulullah (SAW)
ইন্তেকালের আগে রোমান বাহিনীর
বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যে আরবের উত্তর সীমান্তে আশ্-শামে সেনাবাহিনী
পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। তিনি হযরত
উসামাহ বিন যায়েদকে (রাঃ)
এ বাহিনীর সেনাপতি নিয়োগ করেন।
উল্লেখ্য, ঐ সময় আশ্-শাম বা বৃহত্তর সিরিয়া ‘বাইযান্টাইন সাম্রাজ্য' নামে পরিচিত পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। রোমানরা হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পাঠানো দূতকে হত্যা করেছিল এবং এ
ব্যাপারে
আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসায় রাযী হয় নি
একারণেই সেখানে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু হযরত
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইন্তেকালের
কারণে হযরত উসামাহর (রাঃ)
পক্ষে তখন এ অভিযানে
রওয়ানা হওয়া সম্ভব হয় নি।
হযরত
আবু বকর (রাঃ) খলীফাহ
হবার পর ইসলামী হুকুমাতের
অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু
যেহেতু হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আশ্-শামে অভিযান চালানোর
সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেহেতু হযরত আবু বকর
(রা) হযরত উসামাহর (রাঃ)
সেনাপতিত্বে আশ্-শামে সেনাবাহিনী
পাঠান।
এদিকে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইন্তেকালের খবর পেয়ে অনেক লোক মনে করে যে, ইসলামী হুকুমাত দুর্বল হয়ে গেছে। তাই তারা যাকাত দিতে অস্বীকার করে। এই লোকেরা নতুন মুসলমান হয়েছিল এবং তাদের অনেকের অন্তরেই তখনো ঈমান মজবুত হয় নি।
তাই
তারা ইসলামের সকল বিধি-বিধান
মেনে নিতে অস্বীকার করে।
এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর
(রাঃ) ঘোষণা করেন: “আল্লাহর কসম! কোন লোকের
কাছে যদি (যাকাত হিসেবে)
একটি ছাগলছানাও পাওনা থাকে তাকে তা
অবশ্যই দিতে হবে। সে
যদি তা দিতে অস্বীকার
করে তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করব।”
তৎকালে পারস্য সাম্রাজ্যভুক্ত ইরাকের প্রাদেশিক শাসক হুরমুখ তার এলাকায় বসবাসকারী মুসলমানদের সাথে খুবই নিষ্ঠুর আচরণ করেছিল। হযরত আবু বকর (রাঃ) ইরাকের পার্শীদের বিরুদ্ধে আল-মুছান্নাকে (রাঃ) অভিযানে পাঠান।
কিন্তু এ অভিযানের জন্যে
আল-মুছান্নার (রাঃ) বাহিনী যথেষ্ট
ছিল না। একারণে হযরত
খালিদ বিন আল- ওয়ালিদ
(রাঃ) নেতৃত্বে আরেকটি বাহিনী পাঠানো হয়। মুসলিম ও
পারস্য বাহিনীর মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ হয়। এ যুদ্ধে
মুসলমানরা পারস্য সাম্রাজ্যভুক্ত বিরাট এলাকা দখল করে নিতে
সক্ষম হয়।
খলীফা
হযরত আবু বকর (রাঃ)-এরপর রোমানদের দিকে
দৃষ্টি দেন। ঐ সময়
রোমানরা ইসলামী হুকুমাতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে উপদ্রব সৃষ্টি করছিল। ইতিপূর্বে হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
রোমানদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিলেন যা মুতার যুদ্ধ
নামে পরিচিত।
হযরত আবু বকর (রাঃ) রোমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে আলাদা আলাদা চারটি সেনাবাহিনী পাঠান। এ চারটি বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন যথাক্রমে হযরত আবু উবাইদাহ বিন আল-জাররাহ (রাঃ), হযরত ‘আমর বিন আল-‘আস (রাঃ),
ইয়াযীদ
বিন আবি সুফিয়ান ও
হযরত শুরাহবিল বিন হাসানাহ্ (রাঃ)। উক্ত চারটি
বাহিনী ঐক্যবদ্ধ হয়ে রোমানদের বিরুদ্ধে
কার্যকরভাবে মোকাবিলা করে। রোমানরা মোট
দেড় লাখ সৈন্য সমবেত
করে। অন্যদিকে মুসলমানদের মোট সৈন্যসংখ্যা ছিল
মাত্র ২৪ হাজার।
এ
অবস্থায় আরো সৈন্য পাঠানোর
জন্য অনুরোধ করা হলে হযরত
আবু বকর (রাঃ) ইরাকী
রণাঙ্গণে মোতায়েন হযরত খালিদ বিন
আল-ওয়ালীদ (রাঃ) কে সেখানকার
সেনাপতিত্ব আল-মুছান্না (রাঃ)
কে হস্তান্তর করে সিরিয়ায় গিয়ে
বিশাল রোমান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়ার নির্দেশ
দেন।
হযরত আবু
বকর
রাঃ
এর
মৃত্যু
ইতিমধ্যে
হযরত
আবু
বকর
(রাঃ)
অসুস্থ
হয়ে
পড়েন
এবং ত্রয়োদশ হিজরীর ২১শে জুমাদা'উল
আখিরাহ (৬৩৪ খৃস্টাব্দের ২২শে
আগস্ট) ইন্তেকাল করেন। তিনি মাত্র দুই
বছর তিন মাস ইসলামী
হুকুমাতের শাসনক্ষমতা পরিচালনা করেন ৷
হযরত
আবু বকর (রাঃ)-এর
পাঠানো মুসলিম সেনাবাহিনী তাঁর ইন্তেকালের পরে
হযরত উমর
(রাঃ)-এর খিলাফতকালে ইয়ারমুকে
রোমান বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে রোমান
বাহিনী পরাজিত হয়।
হযরত
আবু বকর (রাঃ)-এর
অনেক অবদানের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান হচ্ছে কুর'আন মজীদকে
কিতাবের আকারে লিপিবদ্ধ ও প্রচার করার
পদক্ষেপ গ্রহণ।
হযরত আবু বকর (রাঃ) অত্যন্ত সহজ সরল জীবন যাপন করতেন। তিনি ছিলেন খুবই দ্বীনদার এবং আল্লাহ্ তা'আলার একজন খালেছ বান্দাহ। তিনি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাপারেও হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে অনুসরণ করতেন।
মুসলিম সেনাবাহিনীর প্রতি হযরত আবু বকর
(রাঃ)-এর উপদেশ সব
সময় আল্লাহকে ভয় করবে; তিনি
মানুষের অন্তরের খবর রাখেন। তোমার
অধীনস্থদের প্রতি দয়া কর এবং
তাদের সকলের সাথে সদাচরণ কর।
সংক্ষিপ্ত নির্দেশ দাও; অতি দীর্ঘ
নির্দেশনামা ভুলে যাবার আশঙ্কা
থাকে।
অন্যদেরকে
তাদের আচরণ সংশোধন করার
জন্যে বলার আগে তোমার
নিজের আচরণ সংশোধন কর।
শত্রুদের দূতকে সম্মান কর। তোমার পরিকল্পনার গোপনীয়তা রক্ষা কর। সব সময় সত্যকথা বলবে যাতে তুমি সঠিক পরামর্শ পেতে পার। যে সব বিষয়ে তোমার লোকদের সাথে আলোচনায় অসুবিধা নেই সে সব বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা কর;
এর ফলে
তাদের স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা পালন বৃদ্ধি পাবে
শত্রুর ওপরে নযর রাখার
জন্যে যথাযথ পদক্ষেপ নাও। আন্তরিকতা ও
ইখলাছ সহকারে সঙ্গী-সাথীদের সাথে আচরণ করবে।
কাপুরুষতা ও অসততা পরিত্যাগ
কর। খারাপ লোকের সাথে মেলামেশা ও
চলাফেরা করো না।
পোস্ট ট্যাগঃ