মুসা আঃ এর মোজেজা
মানবজাতির
ইতিহাসে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নবী ও রাসূল
ছিলেন হযরত মূসা (আঃ)। তার জীবনী ও জীবনকালে ঘটে যাওয়া মোজেজা আজকের পোস্টে বর্ণিত হলো।
হযরত মুসা আঃ এর লাঠির মুজিজা
আল্লাহ্ তা'আলা হযরত মূসা (আঃ)কে দু'টি মু'জিযাহ দান করেন। একটি মু'জিযাহ ছিল এই যে, তিনি তাঁর হাতের লাঠিটি মাটিতে রাখলে তা একটি জীবন্ত অজগরে পরিণত হয়ে যেত। দ্বিতীয়টি এই যে, তিনি তাঁর হাত বগলে নিয়ে বের করে আনলে তা আলোর মত ঝলমল করত। (সূরা তা-হা ১৭-২২)
আল্লাহ্ তা'আলা হযরত মূসা (আঃ) কে ফির'আউনের নিকট গিয়ে তাকে তাওহীদের দাওয়াত দেয়ার জন্যে আদেশ দেন। (সূরাহ তা-হা ৪২-৪৪) তখন হযরত মূসা (আঃ) তাঁর ভাই হযরত হারুন (আঃ) কে তাঁর সহযোগী হিসেবে মনোনীত করার জন্যে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট আবেদন করেন এবং আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর আবেদন কবুল করেন। (সূরা তা-হা ২৪-৩৬)
হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত হারুন (আঃ) ফির'আউনের কাছে গেলেন। তাঁরা তাকে আল্লাহ্ তা'আলার আনুগত্যের দাওয়াত দিলেন এবং ইসরাঈলীদেরকে মুক্তিদানের জন্যে অনুরোধ জানালেন। কিন্তু ফিরাউন তাঁদের দাওয়াত ও অনুরোধ উভয়ই প্রত্যাখ্যান করল (সূরা তা-হা ৪৭-৫৪)। শুধু তা- ই নয়, সে হযরত মূসা (আঃ) কে ঠাট্টাবিদ্রুপ করল।
তখন হযরত মূসা (আঃ) তাঁর বাণীর সত্যতা প্রমাণের জন্যে ফিরাউনকে মু'জিযাহ দেখালেন। তিনি তাঁর হাতের লাঠিটি মাটিতে ফেলে দিলেন। সাথে সাথে তা একটা অজগরে পরিণত হল। হযরত মূসা (আঃ) আবার সেটিকে হাতে তুলে নিলেন ও সাথে সাথে তা পুনরায় লাঠি হয়ে গেল।
ফিরাউন ও তার পরিষদবর্গ ঘটনা দেখে হতভম্ব হয়ে গেল। কিন্তু ফিরাউন হযরত মূসা (আঃ) কে একজন যাদুকর মনে করল এবং তার অনুগত যাদুকরদের সাথে মোকাবেলা করার জন্যে তাঁকে আহ্বান জানাল। ফিরআউনের ধারণা ছিল যে, তার অনুগত যাদুকররা আরো বেশী জমকালো যাদু দেখাতে পারবে। (সূরা আশ-শু'আরা' ২৩-৩৭)
নির্দিষ্ট দিনে ফির'আউনের অধীনস্থ যাদুকররা হযরত মূসা (আঃ)-এর সাথে মোকাবেলা করতে এল। কিন্তু তারা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হল। যাদুকররা তাদের লাঠি ও রশিকে কৃত্রিম সাপে পরিণত করল। কিন্তু হযরত মূসা (আঃ)-এর লাঠি সাপে পরিণত হয়ে সেগুলোকে খেয়ে ফেলল।
ফিরাউন ও তার যাদুকরদের পক্ষে এটা বিশ্বাস করাই কঠিন ছিল। কিন্তু যাদুকররা সত্যের সামনে নতি স্বীকার কলল এবং আল্লাহ্ ওপর ঈমান আনল ও ঈমানের কথা ঘোষণা করল। (সূরা আশ-শু'আরা’ ৩৮-৪৭)
মুসা আঃ এর পিতার নাম কি
তাঁর পিতার নাম ছিল “ইমরান। হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর ৪৫০ বছর পর মিসরে হযরত মূসা (আঃ)-এর জন্ম হয়। ঐ সময় মিসরে রাজাদেরকে ফিরাউন বলা হত। হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর পিতা হযরত ইয়াকূব (আঃ) ছিলেন হযরত ইবরাহীম (আঃ)- এর নাতী। হযরত ইয়াকূব (আঃ)-এর আরেক নাম ছিল ইসরাঈল। একারণে তাঁর বংশধরদেরকে বানূ ইসরাঈল বলা হয়।
হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর সময় থেকে বানূ ইসরাঈল মিসরে বসবাস করছিল। হযরত মূসা (আঃ)-এর জন্মের সময় ও তার আগে যে ফিরাউন মিসরে রাজত্ব করত সে বানূ ইসরাঈলকে বিদেশী হিসেবে গণ্য করত এবং তাদের সাথে অত্যন্ত কঠোর আচরণ করত। সে ভয় করছিল যে, বানূ ইসরাঈলের জনসংখ্যা হয়ত এক সময় খুবই বেশী হয়ে যাবে, ফলে তারা মিসরে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
তাই
ফিরাউন
বা ইসরাঈলের যে কোন পরিবারে
কোন পুরুষ শিশু জন্মগ্রহণ করলে
তাকে সাথে সাথে হত্যা
করার জন্যে নির্দেশ দেয়। (সূরা আল কাছাছ-৪-৬) বানূ
ইসরাঈলের এ কঠিন সময়ে
হযরত মূসা (আঃ) জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর মা তাঁকে তিনমাস
লুকিয়ে রাখেন। এরপর যখন আর
তাঁর পক্ষে তাঁকে লুকিয়ে রাখা সম্ভব ছিল
না।
মূসা আঃ এর জীবনী
তখন আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর অন্তরে একটি পন্থা জাগিয়ে দিলেন। তখন তিনি হযরত মূসা (আঃ) কে এমন একটি ঝুড়ির মধ্যে রাখলেন যাতে পানি প্রবেশ করে না। এরপর তিনি ঝুড়িটিকে নীল নদের পানিতে ভাসিয়ে দিলেন। (সূরাহ তা-হা ৩৮-৩৯) এরপর কি ঘটে তা দেখার জন্যে তিনি তাঁর মেয়ে
মারইয়ামকে
নযর রাখতে বললেন। যাতে কেউ সন্দেহ
করতে না পারে সেজন্যে
মারইয়াম দূর থেকে ঝুড়িটির
প্রতি নযর রাখতে লাগলেন
(সূরা আল-কাছাছ ১১)।
ঝুড়িটি
ভাসতে ভাসতে নদীর অপর তীরে
গিয়ে ঠেকল। তখন ফির'আউনের
পরিবারের একজন সদস্য ঝুড়িটি
তুলে নিল এবং এর
মধ্যে একটা সুন্দর ফুটফুটে
ছেলে দেখে বিস্মিত ও
আনন্দিত হল। সে মূসা
(আঃ) কে ফির'আউনের
স্ত্রীর কাছে নিয়ে গেল।
ফির'আউনের স্ত্রী শিশু মূসা (আঃ) কে দেখে খুবই আনন্দিত হলেন এবং তাঁকে পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করলেন (সূরা আল-কাছাছ ৮-৯)। এ সময় হযরত মূসা (আঃ)- এর বোন মারইয়াম ফির'আউনের প্রাসাদে গেলেন এবং বললেন যে তাঁর জানামতে
এমন একজন মহিলা
আছেন যিনি শিশুটিকে বুকের
দুধ খাওয়াতে পারবেন। আসলে মারইয়াম তাঁর
মায়ের কথাই বলছিলেন (সূরা
আল-কাছাছ ১২)। ফির'আউনের স্ত্রী এতে রাযী হওয়ায়
হযরত মূসা (আঃ) কে তাঁর
মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া
হল। বস্তুতঃ আল্লাহ্ যাকে চান এভাবেই
রক্ষা করেন।
হযরত
মূসা (আঃ) ফির'আউনের
ঘরেই বড় হলেন। তিনি
পূর্ণ যুবক হবার পর
একদিন তিনি দেখতে পেলেন
যে, একজন মিসরীয় একজন
ইসরাঈলীকে প্রহার করছে। তখন হযরত মূসা
(আঃ) ইসরাঈলীর পক্ষ নিয়ে মিসরীয়
লোকটিকে ঠেকাবার জন্যে তাকে একটা ঘুষি
মারলেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে মিসরীয় লোকটি মারা গেল। (সূরা
আল কাছাছ ১৫)
হযরত মূসা (আঃ) ফির'আউনের রাজত্ব ছেড়ে অনেক দূরে মাদ্ইয়ানে চলে গেলেন। (সূরা আল-কাছাছ ২২-২৮) সেখানে তিনি দশ বছর থাকেন। এরপর তিনি সীনাই পাহাড়ের পাদদেশে তুওয়া উপত্যকায় গিয়ে পৌঁছেন। সেখানে আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে ওহী নাযিল হয় এবং তাঁকে রাসূল হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। (সূরা আল- কাছাছ ৩০)
মুসা আঃ
এর
দোয়া
এতে ফিরাউন রেগে গেল এবং সে বানূ ইসরাঈলের ওপর আগের চেয়েও বেশী জুলুম-অত্যাচার করতে লাগল। ইতিমধ্যে আল্লাহ্ তা'আলা হযরত মূসা (আঃ) কে তাঁর অনুসারীদের নিয়ে মিসর ত্যাগের জন্যে আদেশ দিলেন। (সূরা তা-হা ৭৭) হযরত মূসা (আঃ) তাঁর অনুসারীদের প্রস্তুত হতে বললেন।
এরপর
তাঁরা রাতের বেলা ফির'আউনের
অজ্ঞাতসারে বেরিয়ে পড়েন। তাঁরা সাগরের তীরে এসে পৌঁছেন।
এদিকে ফিরাউন তাঁদের মিসর ত্যাগের কথা জানতে পেরে তার সৈন্যসামন্তসহ তাঁদেরকে পিছু ধাওয়া করে। তারা ইসরাঈলীদেরকে প্রায় ধরে ফেলে আর কি! এদিকে তাঁদের সামনে রয়েছে বিশাল সমুদ্র। এ অবস্থায় আল্লাহ্ তা'আলা হযরত মূসা (আঃ) কে তাঁর হাতের লাঠিটি সাগরের পানিতে ফেলতে বললেন। তিনি লাঠিটি পানিতে ফেলতেই সাগরের পানি দু'ভাগ হয়ে গেল
এবং মাঝখান দিয়ে ইসরাঈলীদের সাগর পার হওয়ার জন্যে একটি পথ তৈরী হয়ে গেল। (সূরা আশ-শু'আরা’ ৫২-৬৫) ফিরাউন ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁদের পিছু ধাওয়া অব্যাহত রাখল। হযরত মূসা (আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা নিরাপদে সাগরের অপর তীরে গিয়ে পৌঁছলেন।
ফিরাউন ও তার সৈন্যরা
তখনো সাগরের মাঝখানে ছিল। হঠাৎ দুই
দিকের পানি এসে তাদেরকে
তলিয়ে ফেলল। ফিরাউন ও তার সৈন্যরা
সবাই সাগরে ডুবে মারা গেল।
(সূরাহ আশ-শু'আরা’
৬৬) আল্লাহ্ তা'আলা এভাবেই
সীমালংঘনকারীদেরকে শাস্তি দেন ও তাঁর
অনুগত বান্দাহদেরকে সাহায্য করেন।
সর্বশক্তিমান
আল্লাহ্ তা'আলা বানূ
ইসরাঈলের প্রতি অনেক অনুগ্রহ করেছিলেন।
কিন্তু তারা ছিল খুবই
অকৃতজ্ঞ। তারা আল্লাহ্ তা'আলার হুকুমসমূহ অমান্য
করে, নবীদেরকে (আঃ) বিদ্রুপ করে,
এমন কি কোন কোন
নবীকে (আঃ) হত্যা করে।
তারা মূর্তিপূজা শুরু করে এবং
আল্লাহর বাণীকে বিদ্রুপ করে।
এ অবস্থায় দয়াময় মেহেরবান আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্যে আরেকজন নবী পাঠালেন। তিনি হলেন হযরত মারইয়াম (আঃ)-এর পুত্র হযরত ঈসা (আঃ)। (সূরা আল বাকারাহ-৮৭)
আল্লাহ্ তা'আলা হযরত ঈসা
(আঃ)-এর ওপর আসমানী
কিতাব ইন্জীল নাযিল
করেন এবং তিনি হযরত
মূসা (আঃ)-এর ওপর
নাযিলকৃত কিতাব তাওরাহর সত্যতা স্বীকার করেন। (সূরা আল মায়িদাহ
৪৬)
ঈসা আঃ এর জীবনী
এর
জন্ম ছিল একটি অলৌকিক
ঘটনা। তিনি আল্লাহর হুকুমে
পিতা ছাড়াই কুমারী হযরত মারইয়াম
(আঃ)-এর গর্ভে জন্মগ্রহণ
করেন। (সূরাহ মারইয়াম ১৭-২১) আল্লাহ্
যা চান, তা-ই
করতে পারেন। তাঁর জন্যে সব
কিছুই সম্ভব। তিনি যখন কোন
কিছু করতে চান তখন
তিনি শুধু বলেন, “হও”,
আর অমনি তা হয়ে
যায়। (সূরা আল-বাকারাহ
১১৭)
আমরা
জানি যে, আল্লাহ্ তা'আলা হযরত আদম
(আঃ) কে পিতামাতা ছাড়াই
সৃষ্টি করেছেন। তাই তিনি যে
হযরত ‘ঈসা (আঃ) কে
পিতা ছাড়া সৃষ্টি করেছেন এতে অবাক হবার
কিছুই নেই।
হযরত
ঈসা (আঃ) শিশু থাকাকালেই কথা
বলতে পারতেন। তার বয়স যখন
৩০ বছর তখন তাঁকে
নবুওয়াতের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি তিন
বছর নবী হিসেবে দায়িত্ব
পালন করেন। (সূরা মারইয়াম ২৯-৩৪)
আল্লাহ্
তা'আলা হযরত ঈসা
(আঃ) কে কতগুলো মু'জিযাহ দিয়ে-ছিলেন। তিনি মাটি
থেকে
পাখী
বানাতে
পারতেন
যা
জীবন
পেয়ে
উড়ে
যেত।
তিনি কয়েক মিনিটের মধ্যে কুষ্ঠরোগ সারিয়ে দিতেন, জন্মান্ধকে দৃষ্টিশক্তি
ফিরিয়ে
দিতেন
এবং
মৃতকেও
জীবিত
করতেন।
তিনি আল্লাহ্ তা'আলার অনুগ্রহে
এসব অলৌকিক কাজ করতেন।
মরিয়ম আঃ
এর
জীবনী
কুর'আন মজীদের সূরা আলে ইমরানে হযরত ঈসা (আঃ)-এর জন্ম ও অলৌকিক ক্ষমতাসমূহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে; “আর (স্মরণ কর) যখন ফেরেশ্তারা বলল: হে মারইয়াম আল্লাহ্ তোমাকে তাঁর এক বাণীর সুসংবাদ দিচ্ছেন যার নাম আল-মাসীহ মারইয়ামপুত্র “ঈসা।
তিনি দুনিয়া
ও আখিরাতে মহাসম্মানের অধিকারী এবং (আল্লাহ্) ঘনিষ্ঠদের
অন্যতম। তিনি দোলনায় থাকাকালে
লোকদের সাথে কথা বলবেন
এবং পূর্ণ বয়স্ক অবস্থায়ও (কথা বলবেন)।
আর তিনি সৎকর্মশীলদের অন্যতম
৷
সে
(মারইয়াম) বলল: হে আমার
রব! কি করে আমার
সন্তান হবে যখন কোন
মানুষ আমাকে স্পর্শ করে নি! তিনি
(আল্লাহ্) বললেন: এভাবেই (হবে যে,) আল্লাহ্
যাকে ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কোন
বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখন বলেন,
হও, আর অমনি তা
হয়ে যায়।
আর
তিনি (আল্লাহ্) তাঁকে কিতাব, হিকমাহ (পরম জ্ঞান), তাওরাহ
ও ইন্জীল শিক্ষা
দেবেন। আর বানি ইসরাঈলের
নিকট তাঁকে রাসূল হিসেবে পাঠাবেন।
সে (ঈসা) বলল: নিঃসন্দেহে আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শনাদিসহ তোমাদের নিকট এসেছি। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে মাটি দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরী করি, অতঃপর তাতে ফুঁক দেই, তারপর তা আল্লাহর অনুমতিক্রমে পাখী হয়ে যায়।
আর আমি জন্মান্ধকে ও কুষ্ঠরোগীকে ভাল করে দেই, আর মৃতকে জীবিত করে দেই আল্লাহ্ অনুমতিক্রমে। আর তোমরা যা খেয়ে আস এবং তোমরা যা ঘরে রেখে আস আমি তা তোমাদেরকে বলে দেই। এতে অবশ্যই তোমাদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা মু'মিন হয়ে থাক, (এ মু'জিযাহসমূহ এজন্য যে,)
যাতে আমি আমার পূর্ব থেকে বিদ্যমান তাওরাহর সত্যায়ন করি এবং যাতে তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এমন কতক জিনিসকে হালাল করে দেই। আর আমি তোমাদের নিকট তোমাদের রবের কতক নিদর্শনসহ এসেছি।
অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং
আমার আনুগত্য কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্
আমার এবং তোমাদেরও রব।
অতএব, তাঁরই ইবাদাত কর। এটাই সহজ
সরল পথ।” (সূরা আলে ইমরান
৪৫-৫১)
হযরত ঈসা
(আঃ)
লোকদেরকে কেবল আল্লাহ্ তা'আলার আনুগত্য করার
জন্যে দাওয়াত দেন। কিন্তু তাঁর
কতক অনুসারী তাঁর সম্পর্কে উদ্ভট
কল্পকাহিনী তৈরী করে এবং
তাঁকে আল্লাহর অংশ বলে গণ্য
করে, এমন কি তাঁকে
আল্লাহর পুত্র বলেও দাবী করে।
(সূরা আল-মায়িদাহ ১১৬-১১৭)
মুসলমানরা হযরত ঈসা (আঃ) কে একজন রাসূল এবং আল্লাহর বান্দাহ বলে বিশ্বাস করে। (সূরা আয-যুখরূফ ৫৯)। তারা তাঁকে আল্লাহর পুত্র বলে মনে করে না। আল্লাহ্ তা'আলার কোন পুত্র বা কন্যা নেই। তিনি কোন সৃষ্ট প্রাণীর মত নন।
তিনিই সব কিছুকে ও সকলকে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। আল্লাহ্ তা'আলা এক এবং তিনি অবিভাজ্য। ইসলামে কোন ত্রিত্ববাদী (Trinity) ধারণা নেই। (সূরা আন নিসা' ১৭১)। ত্রিত্ববাদ সুস্পষ্ট শিরক। কাউকে আল্লাহর পুত্র বলে অভিহিত করাকে মুসলমানরা বিরাট পাপ (কবিরা গুনাহ) বলে বিশ্বাস করে। (সূরা আল-মায়িদাহ ১৭)
কুর'আন মজীদের
ঘোষণা অনুযায়ী, হযরত ‘ঈসা (আঃ) কে
ক্রুশবিদ্ধ করা হয় নি।
বরং সর্বশক্তিমান ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ্
তা'আলা তাঁকে তুলে
নিয়েছেন। (সূরা আন-নিসা'
১৫৭-১৫৮)। আল্লাহ্
তা'আলার পক্ষে সব
কিছুই সম্ভব। তিনিই তো হযরত ইবরাহীম
(আঃ) কে আগুন থেকে
এবং হযরত মূসা (আঃ)
কে ফির'আউনের হাত
থেকে রক্ষা করেছেন। সমগ্র বিশ্বলোকের এবং এতে যা
কিছু আছে সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা
তিনিই।
পোস্ট ট্যাগঃ