হযরত ইব্রাহিম আঃ এর জীবনী
হযরত ইব্রাহিম আঃ এর জীবনী
হযরত ইবরাহীম (আঃ) ছিলেন শীর্ষস্থানীয় নবী-রাসূলগণের (আঃ) অন্যতম। তিনি ‘খালীলুল্লাহ' অর্থাৎ 'আল্লাহর বন্ধু' হিসেবে সুপরিচিত। (সূরাহ আন-নিসা-১২৫); তিনি ছিলেন বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দা। তাঁর পিতার নাম ছিল আযোর। আযোর মূর্তি তৈরী ও বিক্রি করত।
হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর এলাকার লোকেরা মূর্তিপূজা করত। তারা একটি মন্দিরে অনেকগুলো মূর্তি তৈরী করে রেখেছিল এবং সেগুলোকেই পূজা করছিল।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) অত্যন্ত বুদ্ধিমান যুবক ছিলেন। পাথরের তৈরী যে মূর্তিগুলো না নড়াচড়া করতে পারে, না কথা বলতে পারে, লোকেরা সেগুলোর সামনে নত হয় দেখে তাঁর বড়ই আশ্চর্য লাগত। মূর্তিগুলো এমন কি তাদের চোখ বা নাকের ওপর বসা মাছি পর্যন্ত তাড়াতে পারে না। হযরত ইবরাহীম (আঃ) ভেবে অবাক হতেন যে, লোকেরা বোকার মত এহেন অক্ষম মূর্তিগুলের পূজা করছে কেন!
হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর অনুসন্ধিৎসু মন আল্লাহ্ তা'আলার সন্ধান করছিল। তিনি শুধু চিন্তা করতে লাগলেন। হঠাৎ তিনি রাতের আকাশে তারকা দেখে মনে করলেন এই বুঝি তাঁর রব। কিন্তু তারকা অস্ত গেলে তিনি নিজ মনে বললেন: “না, যে জিনিস অস্ত যায় তা আমার রব হতে পারে না।”
অর্থাৎ তারকা তাঁর রব নয়। এরপর আলোকোজ্জ্বল চাঁদ দেখে তাঁর মনে হল যে, এ-ই বুঝি তাঁর রব। কিন্তু চাঁদ যখন ডুবে গেল তখন তিনি বুঝলেন যে, এ-ও তাঁর রব নয়। এরপর তিনি সূর্যের দিকে তাকালেন এবং বললেন: “এটা সব চেয়ে বড়, এটাই আমার রব।” কিন্তু সূর্য যখন অস্ত গেল তখন তিনি নিজ মনে বললেন, “না, এ আমার প্রভু হতে পারে না।”
অতঃপর তিনি এ উপসংহারে পৌঁছলেন যে, কেবল চিরজীবী চিরস্থায়ী সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তা'আলাই তাঁর রব। তারকারাজি, চাঁদ ও সূর্য তাঁর রব হতে পারে না। (সূরাহ আল-আন'আম ৭৬-৭৯); হযরত ইবরাহীম (আঃ) একবার তাঁর পিতাকে জিজ্ঞেস করলেন: “হে আমার পিতা! আপনি কেন মূর্তির পূজা করেন যা কথা বলতে পারে না, শুনতেও পায় না?” এতে আযোর রেগে যায় এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে এ ধরনের প্রশ্ন না করার জন্যে সাবধান করে দেয়।
তখন হযরত ইবরাহীম (আঃ) মনে মনে ঠিক করলেন যে, লোকদেরকে বুঝিয়ে দেবেন, মূর্তিপূজা এক চরম বোকামীর কাজ। তিনি পরিকল্পনা করলেন যে, লোকদেরকে বাস্তব অভিজ্ঞতা দানের মাধ্যমে শিক্ষা দেবেন।
ইব্রাহিম নবীর মূর্তি ভাঙার ঘটনা
একদিন লোকেরা যখন একটি উৎসবে ব্যস্ত ছিল তখন যে মন্দিরে মূর্তিগুলো রাখা ছিল হযরত ইবরাহীম (আঃ) সেখানে প্রবেশ করলেন। তিনি মূর্তিগুলোকে বললেন: “কি খবর তোমাদের? এখানে খাদ্য-পানীয় আছে; এগুলোর সদ্ব্যবহার করছ না কেন?” বলা বাহুল্য যে,
পাথরের মূর্তিগুলো নীরবই থাকল। তখন হযরত ইবরাহীম(আঃ) একটা কুঠার নিয়ে বড় মূর্তিটা ছাড়া বাকী সবগুলো মূর্তিকেই ভেঙ্গে ফেললেন। তিনি এক বিশেষ উদ্দেশ্যে বড় মূর্তিটিকে রেহাই দিলেন। তিনি অন্য মূর্তিগুলোকে ভাঙ্গার পর কুঠারটি বড় মূর্তিটার ঘাড়ের সাথে ঝুলিয়ে রাখলেন। (সূরাহ আল-আম্বিয়া’-৫৮)
লোকেরা উৎসব থেকে ফিরে এসে মূর্তিগুলোর পূজা করার জন্যে মন্দিরে প্রবেশ করল। কিন্তু তারা তাদের দেবদেবীদের করুণ অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে গেল। তারা স্তম্ভিত, মর্মাহত ও ক্ষিপ্ত হয়ে গেল। “এ জঘন্য কাজ কে করল?” তারা পরস্পরকে জিজ্ঞেস করল।
তারা সকলেই বুঝতে পারল যে, এ কাজ হযরত ইবরাহীমের (আঃ) এর। কারণ, তারা এর আগে তাঁকে তাদের দেবমূর্তিগুলো সম্বন্ধে বেপরোয়া কথাবার্তা বলতে শুনেছিল।
তারা হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে জিজ্ঞেস করল: “মূর্তিগুলো কে ভেঙ্গেছে?” তিনি শান্তভাবে জবাব দিলেন: “বড়টাকে জিজ্ঞেস কর।” লোকেরা তো জানতই যে, মূর্তি কথা বলতে পারে না। তাই তারা বলল: “ হে ইবরাহীম! তুমি কি জান না যে, মূর্তিরা কথা বলতে পারে না?”
তখন হযরত ইবরাহীম (আঃ) বললেন: “তাহলে তোমরা ওগুলোর পূজা কর কেন? ওগুলো কথা বলতে, নড়াচড়া করতে বা কিছু বুঝতে পারে না। কেন তোমরা তাদের কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা কর?”
হযরত ইব্রাহিম আঃ কে আগুনে নিক্ষেপ
লোকদের কাছে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর কথার জবাব দেয়ার মত কোন যুক্তি ছিল না। তবে তারা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারছিল যে, হযরত ইবরাহীম (আঃ) ই মূর্তিগুলো ভেঙ্গেছেন। কিন্তু তাদের পক্ষে বিষয়টি এমনি ছেড়ে দেয়া সম্ভব ছিল না। তারা একটা সভা ডাকল এবং সিদ্ধান্ত নিল যে, তারা হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে জীবন্ত পুড়িয়ে মারবে।
এভাবে তারা তাদের দেবদেবীদের রক্ষা করার উদ্যোগ নিল। (সূরাহ আল-আম্বিয়া’-৫৯-৬৮); অবশ্য হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ্ তা'আলার অনুগ্রহ লাভ করেন। ফলে আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি ক্ষতি থেকে রক্ষা পান। কারণ তিনি সঠিক কাজই করেছিলেন। কাফিররা একটি বিরাট অগ্নিকুণ্ড তৈরী করে এবং হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে তাতে নিক্ষেপ করে।
কিন্তু সাথে সাথেই এক অলৌকিক ঘটনা ঘটল। আগুন হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে পোড়াল না। আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে রক্ষা করলেন। লোকেরা তা দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল। তারা নিজেদের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও এরূপই ঘটল।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) নিরাপদ থেকে গেলেন। আর যারা তাঁকে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করেছিল তারা হতাশ ও দুঃখিত হল এবং নিজেদেরকে অসহায় অনুভব কতে লাগল। (সূরাহ আল-আম্বিয়া’-৬৯-৭০) এভাবে আল্লাহ্ তা'আলা হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে সত্যের জ্যোতি প্রদান করলেন।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) ছিলেন আল্লাহ্ তা'আলার বান্দা ও রাসূল। (সূরাহ আন-নাহল ১২০-১২২); তিনি আল্লাহ্ তা'আলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে তাঁর পুত্র হযরত ইসমা'ঈল (আঃ) কে কুরবানী করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন।
আল্লাহ্ তা'আলা হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর এই প্রস্তুতিকেই কবুল করে নেন এবং হযরত ইসমা'ঈল (আঃ)-এর পরিবর্তে কুরবানী করার জন্যে একটি দুম্বা পাঠিয়ে দেন। (সূরাহ আছ-ছাফ্ফাত ১০১-১০৭) আমরা এ ঘটনার স্মরণে প্রতি বছর ‘ঈদুল আয্হা উদযাপন করে থাকি I
হযরত ইবরাহীম (আঃ) ই তাঁর পুত্র হযরত ইসমা'ঈল (আঃ)-এর সহায়তায় মক্কায় কা'বাহ্ ঘর নির্মাণ করেন। (সূরাহ আল-হাজ্জ২৬-২৭)
হযরত নূহ আঃ এর জীবনী
হযরত আদম (আঃ)-এর পর শত শত বছর পার হয়ে গেল। তাঁর বংশধরদের দ্বারা পৃথিবী পূর্ণ হয়ে গেল। সময়ের প্রবাহে হযরত আদম (আঃ)-এর বংশধররা আল্লাহ্ তা'আলাকে ভুলে গেল এবং তারা পাথরের তৈরী মূর্তির পূজা করতে লাগল। তারা খারাপ হয়ে গেল, মিথ্যা বলতে ও চুরি করতে লাগল এবং সংকীর্ণমনা ও লোভী হয়ে পড়ল ৷
এ
অবস্থায় আল্লাহ্ তা'আলা হযরত
নূহ্ (আঃ) কে নবী
করে তাদের কাছে পাঠালেন হযরত
নূহ্ (আঃ) তাদেরকে মূর্তিপূজা
পরিত্যাগ করে তাওহীদে ফিরে
আসা ও আল্লাহ্ তা'আলার ইবাদাত করার
জন্যে আহ্বান করলেন। তিনি তাদেরকে অন্যান্য
পাপকর্ম ও পরিত্যাগ করতে
বললেন। তিনি তাদেরকে শেষবিচারের
দিনের কঠিন শাস্তির ব্যাপারে
সতর্ক করে দিলেন। (সূরাহ
আল-আ'রাফ-৫৯-৬৪)।
হযরত
নূহ্ (আঃ) তাঁর জাতির
লোকদেরকে আল্লাহ্ তা'আলার ‘ইবাদাতের
পথে ফিরিয়ে আনার জন্যে বহুবছর
চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা তাঁর ডাকে
সাড়া দেয় নি। বরং
তারা তাঁকে উপহাস ও বিদ্রুপ করল
এবং তাঁর প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য
ও ঘৃণা প্রকাশ করল।
এমন কি তারা তাঁকে
উন্মাদ ও মিথ্যাবাদী বলল।
(সূরাহ আশ-শূ‘আরা-১০৫)।
হযরত নূহ্
(আঃ)
৯৫০
বছর
জীবিত
ছিলেন
(সূরাহ আল-'আনকাবুত-১৪)। কিন্তু এই
সুদীর্ঘ সময়ে খুব অল্প সংখক
লোকই তাঁর ডাকে সাড়া
দিয়ে ঈমান
এনেছিল। এমন কি তাঁর
স্ত্রী ও পুত্র তাঁর
ওপর ঈমান আনে নি।
হযরত
নূহ্ (আঃ) তাঁর জাতির
লোকদের পাষাণহুদয় অবস্থা ও আচরণে মনে
খুবই কষ্ট পান ও
তাদের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েন।
সত্যের বিরোধিতার ক্ষেত্রে তারা এতই কঠোরতার
আশ্রয় নেয় যে, শেষ
পর্যন্ত হযরত নূহ (আঃ)
তাদের ওপর খুবই অসন্তুষ্ট
হন এবং আল্লাহর নিকট
দু'আ করেন:
“হে
আমার রব! এই ধরণীর
বুকে একজন কাফিরকেও অবশিষ্ট
রেখো না।” (সূরাহ আন-নূহ্-২৬)।
হযরত নূহ
আঃ
এর
নৌকা
বর্তমানে
কোথায়
আছে?
হযরত নূহ্ (আঃ) আল্লাহ্ তা'আলার নিকট ফরিয়াদ করলেন: “আমি পরাভূত হয়েছি, অতএব, আমাকে সাহায্য কর।” (সূরাহ আল-কামার-১০) এছাড়া তিনি তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের রক্ষা করার জন্যে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট দু'আ করলেন (সূরাহ আশ-শূ‘আরা-১১৮) সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তা'আলা হযরত নূহ্ (আঃ) এর দু'আ কবুল করেন এবং তাঁকে একটি জাহাজ বানাবার নির্দেশ দেন। সূরাহ হুদ-৩৭);
হযরত নূহ্ (আঃ) একটি বড় আকারের (কাঠের) জাহাজ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কাজটা মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু হযরত নূহ্ (আঃ) অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে জাহাজ তৈরীর কাজ অব্যাহত রাখলেন। লোকেরা যখন হযরত নূহ্ (আঃ) কে জাহাজ তৈরী করতে দেখল তখন তারা তাঁকে উপহাস ও বিদ্রুপ করতে লাগল।
তারা মনে করল যে, তিনি পাগল হয়ে গেছেন। কারণ তারা সমুদ্র থেকে শত শত মাইল দূরে এত বড় একটা জাহাজ নির্মাণের পিছনে কোনই যুক্তি খুঁজে পেল না। (সূরাহ হুদ-৩৮)
তারা জিজ্ঞেস করল: “এ জাহাজ কি জন্য?” অবশ্য তাদের প্রশ্নের জবাব স্বচক্ষে দেখার জন্যে তাদের খুব বেশী দিন অপেক্ষা করার প্রয়োজন ছিল না। কারণ আল্লাহ্ তা'আলার পরিকল্পনা ছিল এই যে, তিনি পৃথিবীকে কাফিরদের অপবিত্র অস্তিত্ব থেকে পবিত্র করবেন এবং কেবল হযরত নূহ্ (আঃ)-এর প্রতি ঈমান পোষণকারী ও তাঁকে সাহায্যকারীদের বাঁচিয়ে রাখবেন।
হযরত নূহ (আঃ)
তাঁর প্রতি উপহাসকারীদেরকে বললেন যে, খুব শীঘ্রই
এক মহাপ্লাবন হবে এবং তখন
তারা আশ্রয় নেয়ার মত কোন জায়গা
পাবে না। এতে লোকেরা
আরো বেশী হাসাহাসি করল।
কিন্তু খুব শীঘ্রই আল্লাহ্
তা'আলা তাঁর পরিকল্পনা
কার্যকরী করলেন এবং কাফিররা স্বচক্ষে
তা ঘটতে দেখল।
অনেক দিন যাবত কঠোর পরিশ্রমের ফলে জাহাজ তৈরীর কাজ শেষ হল। আল্লাহ্ তা'আলা হযরত নূহ্ (আঃ) কে সকল প্রকার পশু-পাখীর এক জোড়া (একটি নারী ও একটি পুরুষ) করে জাহাজে তুলে নেয়ার জন্যে বললেন। তিনি তা-ই করলেন এবং এরপর তিনি ও তাঁর অনুসারীরা জাহাজে উঠলেন। (সূরাহ হুদ ৪০-৪১);
হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে
গেল। বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হল। আকাশ
থেকে যেমন বৃষ্টি ঝরতে
লাগল তেমনি মাটির নীচ থেকেও পানি
উঠে আসতে লাগল। বৃষ্টি
পড়ছে তো পড়ছেই; গোটা
ভূভাগই প্লাবিত হয়ে গেল। জাহাজে
যারা ছিল তারা বাদে
ভূভাগের সকল প্রাণশীল সৃষ্টিই
প্লাবনের পানিতে ডুবে গেল। আর
জাহাজটি পানিতে ভেসে থাকল। (সূরাহ
আল-কামার -১১-১৫)
প্লাবনের
পানি দীর্ঘ পাঁচ মাস পর্যন্ত
থাকল। প্লাবনের ফলে কাফিরদের সকলেই
ধ্বংস ও নিশ্চহ্ন হয়ে
গেল। এমন কি হযরত
নূহ্ (আঃ)-এর পুত্র
কাফির ছিল বলে সে-ও রক্ষা পেল
না।
হযরত নূহ
আঃ
এর
সন্তান
হযরত নূহ্ (আঃ) তাঁর পুত্রকে জাহাজে তুলে নেয়ার জন্যে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা অনুমতি দেন নি। আল্লাহ্ তা'আলা তাঁকে বলেন যে, কাফির পুত্র তাঁর পরিবারের সদস্য নয়। তখন হযরত নূহ্ (আঃ) তাঁর পুত্রকে রক্ষা করার জন্যে আল্লাহর নিকট আবেদন করার ব্যাপারে লজ্জিত ও অনুতপ্ত হন।
তিনি আল্লাহ্ তা'আলার নিকট
ক্ষমা চান। হযরত নূহ্
(আঃ) ও তাঁর অনুসারীরা
জাহাজে পুরোপুরি নিরাপদে থাকলেন। (সূরাহ হুদ -৪৫-৪৭)
শেষ
পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার হতে
থাকল এবং হযরত নূহ্
(আঃ)-এর জাহাজ (তুরস্কের)
জুদী পাহাড়ে ঠেকল। হযরত নূহ্ (আঃ)
ও তাঁর অনুসারীরা জাহাজ
থেকে নেমে এলেন। (সূরাহ
হুদ-৪৪); এভাবেই আল্লাহ্
তা'আলা তাঁদেরকে রক্ষা
করলেন। (সূরাহ আল-'আনকাবুত-১৫)
আল্লাহ্
তা'আলা হযরত নূহ্
(আঃ)-এর বংশধরদেরকে উন্নতি-অগ্রগতি ও ব্যাপক বংশবৃদ্ধি
দান করেন। তারা সারা দুনিয়ায়
ছড়িয়ে পড়ে। (সূরাহ হুদ-৪৮)
কাফিরদেরকে এভাবেই ভয়াবহ আযাবে নিক্ষেপ করা হয়। আল্লাহ্ তা'আলা কুর'আন মজীদে বলেন: “যারা আমাদের আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছিল আমরা তাদেরকে ডুবিয়ে মেরেছি। নিঃসন্দেহে তারা ছিল এক অন্ধ জনগোষ্ঠী।” (সূরাহ আল-আ'রাফ-৬৪); হযরত নূহ্ (আঃ)-এর কাহিনীতে আমাদের জন্যে শিক্ষণীয় রয়েছে। তা হচ্ছে এই যে, আল্লাহ্ তা'আলাকে অমান্য করার পরিণতি হচ্ছে সর্বাত্মক ধ্বংস।
পোস্ট ট্যাগঃ