কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
কোরবানী করিলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ্ (দঃ) বলিয়াছেন: কোরবানীর সময় আল্লাহর নিকট কোরবানীর চেয়ে অধিক প্রিয় আর কোন জিনিস নাই।
কোরবানীর সময় কোরবানীই সবচেয়ে
বড় ইবাদত। কোরবানী যবাহ্ করিবার সময় প্রথম যে
রক্তের ফোটা পড়ে, তাহা
মাটি পর্যন্ত পৌঁছিবার পূর্বেই কোরবানী আল্লাহর দরবারে কবুল হইয়া যায়।
সুতরাং একান্ত ভক্তি ও আন্তরিক আগ্রহের
সহিত খুব ভাল জানওয়ার
দেখিয়া কোরবানী করিবে।
হযরত
_রসূলুল্লাহ্ (_দঃ) _বলিয়াছেন: ‘_কোরবানীর _জানওয়ারের _যত _পশম _থাকে _প্রত্যেক
_পশমের _পরিবর্তে _এক _একটি _নেকী _লেখা _হয়।'
সোবহানাল্লাহ্!
একটু চিন্তা করিয়া দেখ, ইহা অপেক্ষা
বড় সৌভাগ্যের বিষয় আর কি হইতে
পারে? একটি কোরবানী করিয়া
কত হাজার নেকী পাওয়া যায়।
একটি কোরবানী বকরীর গায়ের পশম সকাল হইতে
সন্ধ্যা পর্যন্ত গণিয়াও শেষ করা যায়
না। একটি কোরবানী করিলে
এত নেকী।
অতএব, কেহ যদি মালদার এবং ছাহেবে-নেছাব না-ও হয়, তবুও সওয়াবের আশায় তাহার কোরবানী করা উচিত। কেননা, এই সময় চলিয়া গেলে এত অল্প আয়াসে এত অধিক নেকী অর্জনের আর কোন সুযোগ নাই। আর যদি আল্লাহ্ তা'আলা ধনী বানাইয়া থাকেন, তবে নিজের কোরবানীর সঙ্গে সঙ্গে নিজের মৃত মা, বাপ, পীর, ওস্তাদ প্রভৃতির পক্ষ হইতেও কোরবানী করা উচিত।
যেন তাহাদের রূহে সওয়াব পৌঁছিয়া যায়। হযরত রসূলুল্লাহ্ (দঃ)-এর পক্ষ হইতে তাঁহার বিবি ছাহেবানের (আমাদের মাতাগণের) এবং নিজ পীর প্রমুখের পক্ষ হইতেও কোরবানী করিতে পারিলে অতি ভাল। তাঁহাদের রূহ এই সওয়াব পাইয়া অত্যন্ত খুশী হয়। যাহা হউক, অতিরিক্ত করা নফল, কিন্তু নিজ ওয়াজিব রীতিমত আদায় করিতে কিছুতেই ত্রুটি করিবে না।
কারণ আল্লাহর
অগণিত নেয়ামতরাশি অহরহ ভোগ করা
সত্ত্বেও তাঁহারই আদেশ, তাঁহারই _উদ্দেশ্যে _এতটুকু _কোরবানী _যে _না _করিতে
_পারে _তাহার _চেয়ে _হতভাগ্য _আর _কে _আছে?
_গোনাহ্ _কথা _স্বতন্ত্র।
কোরবানির ঈদ কত তারিখে
কোরবানির ঈদ কবে
আগামী
২৯ শে জুন, ২০২৩খ্রি. তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
তোমরা _আল্লাহর _উদ্দেশ্যে _হজ _ও _ওমরাহ _পূর্ণ _করো। _কিন্তু _যদি _তোমরা _বাধা _পাও _তবে _সহজলভ্য কোরবানি _করো। _আর _কোরবানি _সম্পন্ন _না _হওয়া _পর্যন্ত _মুণ্ডন _করো _না। _কিন্তু _অসুস্থতা _বা _মাথায় _কোনো _রোগের _কারণে _আগেই _মস্তক _মুণ্ডন _করে _ফেললে ‘_ফিদিয়া’ _বা _প্রায়শ্চিত্ত _হিসেবে _রোজা _রাখবে, _কোরবানি _বা _সদকা _দেবে।
নিরাপদ _পরিস্থিতিতে _কেউ _হজের _আগে _ওমরাহ _করে _উপকৃত _হতে _চাইলে _সে _সহজলভ্য _কোরবানি _করবে। _কিন্তু _যদি _কেউ _কোরবানির _কোনো _পশু _না _পায়, _তবে _সে _হজের _সময় _তিন _দিন _ও _ঘরে _ফিরে _সাত _দিন, _এভাবে _মোট _১০ _দিন _রোজা _রাখবে।
মসজিদুল _হারামের _কাছে _পরিবার-_পরিজনসহ _বাস _করে _না
_এমন _লোকদের _জন্য _এ _নিয়ম _প্রযোজ্য।
_অতএব _হে _মানুষ! _আল্লাহ-_সচেতন _হও। _আল্লাহর _ধর্মবিধান
_লঙ্ঘন _হতে _দূরে _থাকো।
_জেনে _রাখো, _আল্লাহ _মন্দ _কাজের _শাস্তিদানে _ কঠোর। (সূরা _বাকারা, আয়াত _১৯৬)
নবীজিকে _আল্লাহতাআলা _নির্দেশ _দিয়েছেন- _আপনি _আপনার _রবের _উদ্দেশ্যে _নামাজ _পড়ুন _এবং _কোরবানি _আদায় _করুন। (_সুরা _কাওসার:_২)
অন্য _আয়াতে _এসেছে- (_হে _রাসূল!) _আপনি _বলুন, _আমার _নামাজ, _আমার _কোরবানি, _আমার _জীবন, _আমার _মরণ _রাব্বুল _আলামীনের _জন্য _উৎসর্গিত। (_সুরা _আনআম : _১৬২)
কোরবানী করিবার
নিয়ম
কোরবানীর
জন্তুকে ক্বেবলা দিক করিয়া শোয়াইয়া
প্রথমে এই দো'আটি
পড়িবেনঃ
কোরবানির দোয়া
ও
নিয়ত
إِنِّي وَجَهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوتِ وَالْأَرْضَ حَنِيْفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ لَا شَريكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَاَنَا مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ - اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ
এই
দোআ _পড়িয়া ‘_বিছমিল্লাহে _আল্লাহু
_আকবর' _বলিয়া _যবাহ্ _করিবে।
যবাহ্
_করার _পর _বলিবেঃ
কোরবানির গরু জবাই করার দোয়া আরবি
اَللّهُمَّ تَقَبَّلْهُ مِنّى كَمَا
تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبكَ مُحَمَّدٍ وَ خَلِيْلِكَ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمَا الصَّلوةُ
وَالسَّلَامُ
কোরবানির মাসআলাঃ
- ১। মাসআলাঃ যাহার উপর ছদকা ফিতর ওয়াজিব তাহার উপর কোরবানী করা ওয়াজিব। (অর্থাৎ, ১০ই যিলহজ্জের ফজর হইতে ১২ই যিলহজ্জের সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোন সময় যদি মালেকে নেছাব হয়, তবে তাহার উপর কোরবানী ওয়াজিব হইবে।) যে মালদার নহে তাহার উপর কোরবানী করা ওয়াজিব হইবে না। কিন্তু ওয়াজিব না হওয়া সত্ত্বেও যদি করিতে পারে, তবে অনেক সওয়াব পাইবে।
- ২। মাসআলাঃ মুছাফিরের উপর (মুছাফিরী হালাতে) কোরবানী ওয়াজিব নহে।
- ৩। মাসআলাঃ ১০ই যিলহজ্জ হইতে ১২ই যিলহজ্জের সন্ধ্যা পর্যন্ত এই তিন দিন কোরবানী করার সময়। এই তিন দিনের যে দিন ইচ্ছা সেই দিনই কোরবানী করিতে পারা যায়; কিন্তু _প্রথম _দিন _সর্বাপেক্ষা _উত্তম, _তারপর _দ্বিতীয় _দিন _তারপর _তৃতীয় _দিন।
- ৪। মাসআলাঃ বক্করা ঈদের নামাযের আগে কোরবানী করা জায়েয নহে। ঈদের নামাযের পর কোরবানী করিবে। অবশ্য যে স্থানে ঈদের নামায বা জুমু'আর নামায জায়েয নহে, সে স্থানে ১০ই যিলহজ্জ ফজরের পরও কোরবানী করা জায়েয আছে।
- ৫। মাসআলাঃ কোন শহরবাসী যদি নিজের কোরবানীর জীব এমন স্থানে পাঠায় যেখানে জুমু'আ ও ঈদের নামায জায়েয নাই, তবে তথায় ঈদের নামাযের পূর্বে কোরবানী করা জায়েয আছে, যদিও সে নিজের শহরে থাকে। _যবাহ্ _করার _পর _তথা _হইতে _গোশ্ত _আনাইয়া _খাইতে _পারে।
- ৬। মাসআলাঃ ১২ই যিলহজ্জ সূর্য অস্ত যাইবার পূর্ব পর্যন্ত কোরবানী করা জায়েয আছে, সূর্য অস্ত গেলে আর কোরবানী জায়েয নহে।
- ৭। মাসআলাঃ কোরবানীর তিন দিনের মধ্যে যে দুইটি রাত্র পড়ে সেই দুই রাত্রেও কোরবানী করা জায়েয আছে, কিন্তু রাত্রের বেলায় যবাহ্ করা ভাল নয়। কেননা, হয়ত কোন একটি রগ কাটা না যাইতে পারে ফলে কোরবানী জায়েয হইবে না।
- ৮। মাসআলাঃ কেহ ১০ই এবং ১১ই তারিখে ছফরে ছিল বা গরীব ছিল, ১২ই তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে বাড়ী আসিয়াছে বা মালদার হইয়াছে, বা কোথায়ও ১৫ দিন থাকার নিয়ত করিয়াছে, এরূপ অবস্থায় তাহার উপর কোরবানী ওয়াজিব হইবে ।
কোরবানির পশু
জবাই
করার
নিয়ম
৯।
মাসআলাঃ নিজের কোরবানীর জানওয়ার নিজ হাতেই যবাহ্
করা মুস্তাহাব। যদি নিজে যবাহ্
করিতে না পারে, তবে
অন্যের দ্বারা যবাহ্ করাইবে, কিন্তু নিজে সামনে দাঁড়াইয়া
থাকা ভাল। মেয়েলোক পর্দার
ব্যাঘাত হয় বলিয়া যদি
সামনে উপস্থিত না থাকিতে পারে,
তবে তাহাতে কোন ক্ষতি নাই।
কোরবানির পশু
জবাই
করার
নিয়ম
১০।
মাসআলাঃ কোরবানী করার সময় মুখে
নিয়ত করা ও দো'আ উচ্চারণ করা
যরূরী নহে। যদি শুধু
দেলে চিন্তা করিয়া নিয়ত করিয়া মুখে শুধু ‘বিসমিল্লাহি
আল্লাহু আকবর' বলিয়া যবাহ্ করে, তবুও কোরবানী
জায়েয হইবে। কিন্তু স্মরণ থাকিলেও উক্ত দো'আ
দুইটি পড়া অতি উত্তম।
১১।
মাসআলাঃ কোরবানী শুধু নিজের তরফ
হইতে ওয়াজিব হয়। এমন কি
না-বালেগ সন্তান যদি মালদার হয়,
তবুও তাহাদের উপর কোরবানী ওয়াজিব
নহে এবং মা-বাপের
উপরও ওয়াজিব নহে। যদি কেহ
সন্তানের পক্ষ হইতেও কোরবানী
করিতে চাহে, তবে তাহা নফল
কোরবানী হইবে। কিন্তু না-বালেগের মাল
হইতে কিছুতেই কেরাবানী করিবে না।
১২।
মাসআলাঃ বকরী, পাঠা, খাসী, ভেড়া, দুম্বা, গাভী, ষাঁড়, বলদ, মহিষ, উট,
এই কয় প্রকার গৃহপালিত
জন্তুর কোরবানী করা জায়েয আছে।
এতদ্ব্যতীত হরিণ ইত্যাদি অন্যান্য
হালাল বন্য জন্তুর দ্বারা
কোরবানী আদায় হইবে না।
১৩। মাসআলা : গরু, মহিষ এবং উট এই তিন প্রকার জানওয়ারের এক একটি জানওয়ার এক হইতে সাত জন পর্যন্ত শরীক হইয়া কোরবানী করিতে পারে। তবে কোরবানী জায়েয হইবার জন্য শর্ত এই যে, কাহারও অংশ যেন সাত ভাগের এক ভাগের চেয়ে কম না হয় এবং কাহারও যেন শুধু গোশ্ত খাইবার নিয়ত না হয়, সকলেরই যেন কোরবানীর নিয়ত থাকে;
অবশ্য যদি কাহারও আক্বীকার
নিয়ত হয়, তবে তাহাও
জায়েয আছে। কিন্তু যদি
মাত্র একজনেরও শুধু গোশ্ত খাওয়ার
নিয়ত হয়, কোরবানী বা
আক্বীক্বার নিয়ত না হয়, তবে
কাহারও কোরবানী জায়েয হইবে না। এইরূপ
যদি মাত্র একজনের অংশ সাত ভাগের
এক ভাগের চেয়ে কম হয়, তবে
সকলের কোরবানী নষ্ট হইয়া যাইবে।
১৪। মাসআলা : যদি গরু খরিদ করিবার পূর্বেই সাত জন ভাগী হইয়া সকলে মিলিয়া খরিদ করে, তবে ত তাহা অতি উত্তম, আর যদি কেহ একা একটি গরু কোরবানীর জন্য খরিদ করে এবং মনে মনে এই এরাদা রাখে যে, পরে আরও লোক শরীক করিয়া তাহাদের সঙ্গে মিলিয়া একত্র হইয়া কোরবানী করিব, তবে তাহাও জায়েয আছে।
কিন্তু যদি গরু কিনিবার সময় অন্যকে শরীক করিবার এরাদা না থাকে, একা একাই কোরবানী করিবার নিয়ত থাকে, পরে অন্যকে শরীক করিতে চায়, (কিন্তু ইহা ভাল নহে) এমতাবস্থায় যদি ঐ ক্রেতা গরীব হয় এবং তাহার উপর কোরবানী ওয়াজিব না হয়, তবে পরে সে অন্য কাহাকেও শরীক করিতে পারিবে না, একা একাই গরুটি কোরবানী করিতে হইবে।
আর যদি ঐ
ক্রেতা মালদার হয় এবং তাহার
উপর কোরবানী ওয়াজিব হয়, তবে ইচ্ছা
করিলে পরে অন্য শরীকও
মিলাইতে পারে। (কিন্তু নেক কাজের নিয়ত
বদলান ভাল নয়। )
১৫।
মাসআলাঃ যদি কোরবানীর জীব
হারাইয়া যায় ও তৎপরিবর্তে
অন্য একটি খরিদ করে
প্রথম জীবটিও পাওয়া যায়, এমতাবস্থায় যদি ক্রেতা মালদার
হয়, তবে একটি জীব
কোরবানী করা ওয়াজিব হইবে।
যদি লোকটি গরীব, হয়, তবে উভয়
জীব কোরবানী করা তাহার উপর
ওয়াজিব।
(মাসআলাঃ
কোরবানীর জানওয়ার ক্রয় করার পর যদি
তাহার বাচ্চা পয়দা হয়, তবে ঐ
বাচ্চাও কোরবানী করিয়া গরীব-মিসকীনদিগকে দিয়া
দিবে, নিজে খাইবে না।
যবাহ্ না করিয়া গরীবকে
দান করিয়া দেওয়াও জায়েয।
কোরবানির ভাগের
নিয়ম
১৬। মাসআলা: সাতজনে শরীক হইয়া যদি একটি গরু কোরবানী করে, তবে গোত আন্দাজে ভাগ করিবে না। পাল্লা দ্বারা মাপিয়া সমান সমান ভাগ করিবে; অন্যথায় যদি ভাগের মধ্যে কিছু বেশকম হইয়া যায়, তবে সুদ হইয়া যাইবে এবং গোনাগার হইতে হইবে।
অবশ্য যদি গোশতের সঙ্গে
মাথা, পায়া এবং চামড়াও ভাগ
করিয়া দেওয়া হয়, তবে যে
ভাগে মাথা পায়া বা
চামড়া থাকিবে, সে ভাগে গোশ্ত
কম হইলে জায়েয হইবে,
যত কমই হউক। কিন্তু
যে ভাগে গোশ্ত বেশী
সে ভাগে মাথা, পায়া
বা চামড়া দিলে সুদ হইবে
এবং গোনাহ্ হইবে।
কোরবানির গরুর বয়স
১৭। মাসআলাঃ বকরী পূর্ণ এক বৎসরের কম বয়সের হইলে জায়েয হইবে না। এক বৎসর পুরা হইলে জায়েয হইবে। গরু, মহিষ দুই বৎসরের কম হইলে কোরবানী জায়েয হইবে না। পূর্ণ দুই বৎসরের হইলে জায়েয হইবে। উট পাঁচ বৎসরের কম হইলে জায়েয হইবে না।
দুম্বা
এবং ভেড়ার হুকুম বকরীর মত; কিন্তু ছয়
মাসের বেশী বয়সের দুম্বার
বাচ্চা যদি এরূপ মোটা
তাজা হয় যে, এক
বৎসরের দুম্বার মধ্যে ছাড়িয়া দিলে চিনা যায়
না, তবে সেরূপ দুম্বার
বাচ্চার কোরবানী জায়েয আছে, অন্যথায় নহে!
কিন্তু _বকরীর _বাচ্চা _যদি _এরূপ
_মোটা _তাজাও _হয়, _তবুও _এক _বৎসর _পূর্ণ _না _হইলে _কোরবানী _জায়েয _হইবে _না।
১৮।
মাসআলাঃ যে জন্তুর দুইটি
চোখ অন্ধ, অথবা একটি চোখ
পূর্ণ অন্ধ বা একটি
চোখের তিন ভাগের এক
ভাগ বা আরও বেশী
দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হইয়া গিয়াছে,
সে জন্তুর কোরবানী জায়েয নহেঃ এইরূপ যে
জন্তুর একটি কানের বা
লেজের এক তৃতীয়াংশ বা
তদপেক্ষা বেশী কাটিয়া গিয়াছে
সে জন্তুরও কোরবানী জায়েয নহে
১৯।
মাসআলাঃ জীবটি যদি এমন কৃশ
ও শুষ্ক হয় যে, তাহার
হাড়ের মধ্যের মগজও শুকাইয়া গিয়া
থাকে, তবে সে জন্তুর
কোরবানী জায়েয নহে; হাড়ের ভিতরের
মগজ যদি না শুকাইয়া
থাকে, তবে কোরবানী জায়েয
আছে।
২০।
মাসআলাঃ যে জানওয়ারের একটি
দাঁতও নাই, সে জানওয়ারের কোরবানী জায়েয নহে; আর যতগুলি
দাঁত পড়িয়া গিয়াছে তাহা অপেক্ষা যদি
অধিকসংখ্যক দাঁত বাকী থাকে,
তবে কোরবানী জায়েয আছে।
২১।
মাসআলাঃ যে জন্তুর শিংই
উঠে নাই বা শিং
উঠিয়াছিল, কিন্তু ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, তাহার কোরবানী জায়েয আছে। অবশ্য যদি
একেবারে মূল হইতে ভাঙ্গিয়া
যায়, তবে কোরবানী জায়েয
নহে।
২২।
মাসআলাঃ যে জন্তুকে খাসী
বানাইয়া দেওয়া হইয়াছে তাহার কোরবানী জায়েয আছে। এইরূপে যে
জন্তুর গায়ে বা কাঁধে দাদ
বা খুজলি হইয়াছে তাহার কোরবানীও জায়েয আছে। অবশ্য খুজলির
কারণে যদি জন্তু একেবারে
কৃশ হইয়া থাকে, তবে তাহার কোরবানী
জায়েয নহে।
কোরবানির গোশত
বন্টনের
নিয়ম
২৩।
মাসআলা: কোরবানীর গোশ্ত নিজে খাইবে, নিজের
পরিবারবর্গকে খাওয়াইবে। আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া তোফা দিবে এবং
গরীব মিসকীনদিগকে খয়রাত দিবে। মুস্তাহাব তরীকা এই যে, তিন
ভাগ করিয়া এক ভাগ গরীবদিগকে
দান করিবে। যদি কেহ সামান্য
দান করে, তবে গোনাহ
হইবে না।
২৪।
মাসআলাঃ কোরবানীর চামড়া এমনিই খয়রাত করিয়া দিবে। কিন্তু যদি চামড়া বিক্রয়
করে, তবে ঠিক ঐ
পয়সাই গরীবকে দান করিতে হইবে।
ঐ পয়সা নিজে খরচ করিয়া
যদি অন্য পয়সা দান
করে, তবে আদায় হইয়া
যাইবে বটে, কিন্তু অন্যায়
হইবে।
২৫।
মাসআলাঃ কোরবানীর জীব জবেহকারী ও
গোশ্ত প্রস্তুতকারীর পারিশ্রমিক পৃথকভাবে দিবে, কোরবানীর গোশ্ত চামড়া, কল্লা বা পায়ার দ্বারা
দিবে না।
২৬।
মাসআলাঃ যদি নিজের খুশীতে
কোন মৃতকে সওয়াব পৌঁছাইবার উদ্দেশ্যে কোরবানী করে, তবে তাহা
জায়েয আছে এবং ঐ
গোশ্ত নিজেও খাইতে পারিবে এবং যাহাকে ইচ্ছা
দিতেও পারিবে।
২৭।
মাসআলা: কিন্তু যদি কোন মৃত
ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে কোরবানীর জন্য অছিঅত করিয়া
গিয়া থাকে, তবে সেই কোরবানীর
গোশত সমস্তই খয়রাত করা ওয়াজিব হইবে।
কোরবানির আয়াত
ও
হাদিস
২৮।
মাসআলাঃ কাহারও অনুপস্থিতিতে যদি অন্য কেহ
তাহার পক্ষ হইতে তাহার
বিনা অনুমতিতে কোরবানী করে, তবে কোরবানী
ছহীহ্ হইবে না। আর
যদি কোন জীবের মধ্যে
অনুপস্থিত ব্যক্তির অংশ তাহার বিনানুমতিতে
সাব্যস্ত করে, তবে অন্যান্য
অংশীদারের কোরবানীও ছহীহ্ হইবে না।
২৯।
মাসআলাঃ যদি কোন গরু
ছাগল কাহারও নিকট ভাগী বা
রাখালী দেওয়া হয় এবং তাহার
নিকট হইতে ক্রয় করিয়া
কেহ কোরবানী করে, তবে তাহার
কোরবানী জায়েয হইবে না; ভাগীদার
জীবের মালিক হয় না। আসল
মালিকই প্রকৃত মালিক। আসল মালিকের নিকট
হইতে ক্রয় করিলে তবে জায়েয হইবে।
৩০।
মাসআলাঃ যদি একটি গরু
কয়েক জনে মিলিয়া কোরবানী
করে এবং প্রত্যেকেরই গরীব-মিসকীনদিগকে বিলাইয়া দেওয়ার বা পাকাইয়া খাওয়াইবার
নিয়ত হয়, তবে ইহাও
জায়েয আছে। অবশ্য যদি
ভাগ করিতে হয়, তবে দাঁড়ি
পাল্লা দ্বারা সমান ভাগ করিয়া
দিতে হইবে।
৩১।
মাসআলাঃ কোরবানীর চামড়ার পয়সা পারিশ্রমিকস্বরূপ দেওয়া জায়েয নহে। কেননা, উহা
খয়রাত করিয়া দেওয়া যরূরী।
পোস্ট ট্যাগঃ