সাহাবাদের ঘটনা
সাহাবাদের ঘটনা
অতিথিপরায়ণতার দৃষ্টান্ত
শিহাব
ইবনে
ইবাদ
বর্ণনা
করেছেন, “আবদুল
কায়েস
গোত্রের
যে
প্রতিনিধি
দল (নবম
হিজরীতে
ইসলাম
কবুল
করার
জন্য)
মদীনা
থেকে
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লামের
কাছে
উপস্থিত
হয়েছিল
তার
কিছু
সদস্য
বলেছেন, 'যখন
আমরা
মদীনায়
উপস্থিত
হই
তখন
মুসলমানগণ
খুবই
খুশী
চিত্তে
আমাদেরকে
ভালভাবে
আদর
আপ্যায়ন
করেন।
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লামও
আমাদেরকে
স্বাগত
জানান,
আমাদের
জন্য
দোয়া
করেন
এবং
জিজ্ঞেস
করেন, 'তোমাদের
নেতা
কে?'
প্রতিনিধি
দলের
সদস্যরা
মুনযির
ইবনে
আয়েজ-এর
দিকে
ইশারা
করে
বলেন, “ইনিই
আমাদের
নেতা।'
নবী
করীম
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
বললেন, 'যার
মুখে
আঘাতের
চিহ্ন
আছে?'
আমরা
বলি, 'হ্যাঁ, হে
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম,
ইনিই
আমাদের
নেতা।'
(মুনযির
ইবনে
আয়েজ-এর
মুখে
দাগ
পড়ে
গিয়েছিল।
এ
কারণে
হুজুর
সাল্লাল্লাহ
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
তাঁকে
দাগওয়ালা
উপাধি
দান
করেন)।
এর
আগে
আমরা
তাঁকে
দাগওয়ালা
নামে
অভিহিত
করতাম
না।
প্রতিনিধিদলের
অন্যান্য
লোক
নবী
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লামের
সঙ্গে
সাক্ষাতের
জন্যে
আগেই
তাঁর
কাছে
উপস্থিত
হন। (তারা
নিজেদের
জিনিসপত্র
শৃঙ্খলার
সঙ্গে
গুছিয়ে
রাখেননি
এবং
কাপড়ও
পরিবর্তন
করেননি)।
কিন্তু প্রতিনিধদলের নেতা মুনযির প্রথমে বাহনের পশুগুলো বেঁধে রাখেন এবং সকলের জিনিসপত্র একস্থানে গুছিয়ে রাখেন। তারপর তিনি আপন থলে থেকে নতুন কাপড় বের করে পরেন এবং অপরিষ্কার কাপড় থলের মধ্যে রেখে দেন। তারপর তিনি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হন।
সেই
সময়
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
পা
ছড়িয়ে
হেলান
দিয়ে
বসেছিলেন।
যখন
তিনি
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লামের
সভায়
উপস্থিত
হন
তখন
তাঁকে
স্থান
দেবার
জন্যে
লোকেরা
সরে
বসে
ও
বলে
আপনি
এখানে
আসুন।
সুতরাং
তিনি
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লামের
ডান
দিকে
বসেন।
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে স্বাগত জানান, প্রেমপূর্ণ ভাষায় কথাবার্তা বলেন। তাঁর দেশের এক এক গ্রামের নাম ধরে জিজ্ঞেস করেন। যেমন সফা, মুশাকর ও অন্যান্য বস্তির নাম ধরে জিজ্ঞেস করেন। মুনযির ইবনে আয়েজ বললেন,
'আমার
মাতা-পিতা
আপনার
জন্যে
উৎসর্গিত
হোক;
হে
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম,
মনে
হয়
আপনি
আমাদের
অপেক্ষা
অঞ্চল
সম্পর্কে
অধিক
জানেন।'
তিনি
বললেন, 'হ্যাঁ, আমি
ব্যবসা-বাণিজ্যের
জন্য
অনবরত
তোমাদের
দেশে
গিয়েছি।
সেখানকার
মানুষ
আমাকে
খুব
আদর
যত্ন
করেছে।'
তারপর তিনি আনসারদের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘তোমাদের এই সব ভাইদের আদর যত্ন করো। এরা ইসলাম কবুল করার বিষয়ে তোমাদের মত এবং দেখতেও তোমাদেরই অনুরূপ। যখন অন্য লোকেরা ইসলাম কবুল করতে অস্বীকার করে, এমন কি তারা যুদ্ধ করে নিহত হয়;
এরা
সেখানে
কোন
রকম
জোর-জুলুম
ও
চাপ
ছাড়াই
স্বেচ্ছায়
সন্তুষ্ট
চিত্তে
ঈমান এনেছে।
দ্বিতীয় দিন সকাল বেলা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জিজ্ঞেস করেন, 'তোমাদের আনসারী ভায়েরা তোমাদের কেমন আদর যত্ন করেছে?' তারা বলে, 'এরা সর্বোত্তম ভাই। এরা আমাদের আরামদায়ক বিছানা দিয়েছে, সর্বোত্তম খানা খাইয়েছে এবং রাতে ও সকালে এরা
আমাদের
আল্লাহর
কিতাব
ও
নবীর
জীবন
পদ্ধতি
শিক্ষা
দিয়েছে।'
এ
কথা
শুনে
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
খুবই
সন্তুষ্ট
হন। (তারগীব
ও
তারহীব,
মুসনাদে
আহমদ)
দলীয় কাজে সকলের সাথে অংশ গ্রহণ করা নফল নামায থেকে উত্তম
হযরত আবু কিলাবা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, “কয়েকজন সাহাবা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে সঙ্গীদের প্রশংসা করতে শুরু করে দেন। তাঁরা বললেন, 'আমরা অমুক সঙ্গীর মত আর কাউকে দেখিনি। সফরকালে তিনি সর্বদা কোরআন পড়েন।
আর
যখন
আমরা
কোথাও
অবস্থান
করার
জন্য
থামি
তখন
তিনি
নফল
নামায
পড়তে
লেগে
যান।'
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'তাহলে ওর মালপত্র কে রক্ষা করে, আর ওর উটকে কে খাওয়ায়?' সকলে বলে, 'আমরা সকলে ওর মালপত্র রক্ষা করি ও উটকে খেতে দিই।' তিনি বললেন, 'তাহলে তোমরা তো তার থেকে উত্তম।” (তারগীব ও তারহীব আবু দাউদ)
- ব্যাখ্যা: দলীয় কাজে সকলেরই অংশ গ্রহণ করা উচিত।
দলীয়ভাবে খানা খাওয়ার আদব
হযরত জাবালা ইবনে সাহাইম বর্ণনা করেছেন, “দুর্ভিক্ষের বছরে আমরা ইবনে যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে ছিলাম। আমরা খেজুর পেয়ে বসে বসে তা খাচ্ছিলাম। এমন সময় হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন,
‘তোমাদের
মধ্যে
কেউ
যেন
এক
গ্রাসে
দুটো
খেজুর
না
খায়।
কারণ
হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
এ
রকম
খেতে
নিষেধ
করেছেন।
তবে হ্যাঁ, যদি সাথে যারা খায় তারা অনুমতি দেয় তাহলে এক গ্রাসে দুটো খেজুর খাওয়া যেতে পারে।” (বোখারী ও মুসলিম)
- ব্যাখ্যা: দূর্ভিক্ষের সময় যখন খানা সামান্য থাকে তখন এক সঙ্গে যারা খায় তাদের মধ্যে কারো নিজে বেশী খাওয়ার মনোভাব থাকা উচিত নয়। কারণ এমন করা হবে স্বার্থপরতা, যা ইসলামী সৌভ্রাতৃত্ব ও ত্যাগের আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল নয়। তবে হ্যাঁ, সাথীরা যদি খারাপ মনে না করে তাহলে এ রকমভাবে খাওয়া যেতে পারে, অবশ্য এ জন্য সাথীদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়া জরুরী।
সাহাবাদের ঘটনাঃ যেভাবে দূর্যোগ মোকাবেলা করতেন
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি
ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, “আশআরী
গোত্রের
লোকেরা
যখন
জিহাদে
যায়
এবং
খাদ্য
অল্প
থাকে
অথবা
মদীনায়
তাদের
মধ্যে
খাদ্যের
অনটন
দেখা
দেয়,
তখন
তাদের
যার
কাছে
যা
থাকে
তা
এনে
একত্রিত
করে।
তিনি
তাদের
প্রশংসা
করে
বললেন, 'ওরা
আমার,
আর
আমি
ওদের।' (বোখারী
ও
মুসলিম)
পোস্ট ট্যাগঃ