কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া
কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া
আজকে
জানবো কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া। নিচে দেওয়া হলো।
উচ্চারণ: আ’ল্ল-হুম্মা ই’ন্নি আ’উ-যুবিকা মীন আ’জা-বিল ক্ববরী, ওয়া আ’উ-যুবিকা মীন আ’জা-বিন না-র। (আরবী থেকে দেখে নিতে হবে সহিহ ভাবে উচ্চারণের জন্য)
অর্থ: ‘হে আল্লাহপাক! আমি
আপনার নিকট কবরের আজাব
থেকে ও জাহান্নামের আজাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করাছি।
কবরের
আজাব থেকে মুক্তির দোয়া
জানার পর আমরা জানবো কবরের আজাব কিভাবে হয় তার বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো।
কবরের আজাব
কত
কঠিন
কবরের
আজাবের বর্ণনা সম্পর্কে আরো অনেক হাদীস
রয়েছে। এ প্রসঙ্গে একটি
দীর্ঘ হাদীসে রাসূল সা. বলেছেন: আল্লাহ্
তা'আলা আজরাঈলকে নির্দেশ দেন আমার অমুক
দুশমনের নিকট যাও। তাকে
আমার নিকট নিয়ে আস।
তাকে আমি অনেক নিয়ামতরাজি
দিয়ে আমি পরীক্ষা করেছি
কিন্তু তার প্রতিদান হিসেবে
সে
আমার নাফরমানী ছাড়া আর কিছুই করেনি।
আজরাঈল আ. আল্লাহ্ তা'আলার হুকুম পেয়ে
ঐ নাফরমানের নিকট এমন এক
বিকট চেহারা নিয়ে উপস্থিত হবে যে, এ
বিকট চেহারাই তার শাস্তির জন্য
যথেষ্ট। আজরাঈলের সাথে পাঁচশত ফেরেশতা
থাকে।
মালাকুল মউত
ভয়নক
মূর্তিতে
বার
চক্ষু
বিশিষ্ট
মালাকুল
মউত ভয়নক মূর্তিতে বার চক্ষু বিশিষ্ট
চেহারায় জাহান্নামের আগুণের তৈরি কণ্টকময় লোহার
গুর্জ হাতে করে উপস্থিত
হয়। মালাকুল মউত এসেই তার
উপর কোড়া মারতে থাকেন। যার কাটাসমূহ মুর্দার
প্রতি শিরায় শিরায় প্রবেশ করে।
পাঁচশত ফেরেশতা
ও
নিতম্বে
কোড়া
মারতে
থাকে
সাথে
থাকা অন্যান্য পাঁচশত ফেরেশতা ও নিতম্বে কোড়া
মারতে থাকে, যার ফলে মুর্দা
বেহুশ হয়ে যায়। অতপর
ফেরেশতারা তামার টুকরা ও জাহান্নামের অঙ্গারগুলি
তার থুতনীর নীচে রেখে দেয়,
মালাকুল মউত বলেন: হে
অভিশপ্ত রূহ! বের হও
ও জাহান্নামের দিকে চলো।
মৃত্যুর পর
কবরের
আজাব
অতপর
তার রূহ যখন শরীর
হতে বের হবে তখন
সে শরীরকে বলবে আল্লাহ্ তা'আলা তোমাকে শাস্তি
দান করুন। তুমি নিজেও ধ্বংস
হয়েছ ও আমাকেও ধ্বংস
করেছ। শরীর রূহকে এ
কথা বলেই সম্বোধন করবে।
আর যমিনের ঐ অংশ যেখানে
সে গুনাহের কাজ করতো তাকে
লানত করতে থাকবে। ওদিকে
শয়তানের লশকরসমূহ দৌড় দিয়ে এসে
শয়তানকে সুসংবাদ জানাবে যে, এক ব্যক্তিকে
জাহান্নাম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি।
পাঁজরের হাড়গুলি
একে
অন্যের
ভিতর
ঢুকে
যাবে
অতপর
যখন তাকে কবরে রাখা
হবে তখন কবর তার
জন্য এত সংকীর্ণ হয়ে
যাবে যে, তার পাঁজরের
হাড়গুলি একে অন্যের ভিতর
ঢুকে যাবে। তারপর তার নিকট ভয়ঙ্কর
মূর্তিতে মুনকার-নাকীর হাজির হয়ে তাকে জিজ্ঞেস
করবে, তোমার রব কে? তোমার
দ্বীন কী? তোমার নবী
কে?
ফেরেশতাগণ গুর্জ
দ্বারা
তাকে
ভীষণভাবে
আঘাত
করবে
প্রত্যেক
প্রশ্নের উত্তরে সে বলবে: আমি
জানি না। উত্তর শুনে
ফেরেশতাগণ গুর্জ দ্বারা তাকে ভীষণভাবে আঘাত
করতে শুরু করবে। আঘাতের
প্রচণ্ডতা এমন হবে যে,
গুর্জের ফুলকিসমূহ কবরে ছড়িয়ে পড়বে।
অতপর তাকে বলা হবে
যে, উপরের দিকে দেখ।
জান্নাতের দরজার
দিকে
তাকিয়ে
বাগান
ও
সৌন্দয
দেখবে
উপরের
দিকে চেয়ে সে জান্নাতের দরজার
দিকে তাকিয়ে সেখানকার বাগান ও সৌন্দয দেখতে
পাবে। তখন ফেরেশতাগণ তাকে
বলবেন: খোদার দুশমন! আল্লাহর ইবাদত করলে এটা তোমার
জন্য চিরস্থায়ী ঠিকানা হতো। এরপর রাসূল
সা. বলেন: সত্তার শপথ, যার হাতে
আমার প্রাণ, এ কথা শুনে
সে এত বেশী কষ্ট
পাবে যে, সেইরূপ আর
কখনো হয়নি।
জাহান্নাম হতে
৭৭
টি
দরজা
তার
কবরের
দিকে
খুলে
দেয়া
হবে
অতপর
জাহান্নামের দরজা খোলা হবে।
ফেরেশতাগণ বলবেন: হে আল্লাহপাক! এর দুশমন!
এটাই তো তোর চিরস্থায়ী
আবাসস্থল। কেননা তুই আল্লাহপাক! এর নাফরমানি
করেছিলি। এরপর জাহান্নাম হতে
৭৭ টি দরজা তার
কবরের দিকে খুলে দেয়া
হবে যেখান হতে কিয়ামত পর্যন্ত
গরম বাতাস ও ধোয়া তার
কবরে আসতে থাকবে।
অপর এক হাদীসের বর্ণনায় এসেছে, প্রসিদ্ধ সাহাবী আনাস ইবন মালিক রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: যমীন প্রতিদিন কয়েকটি কথা ঘোষণা দিয়ে থাকে। যেমন:
১.
হে আদম সন্তান! তুমি
আমার পিঠের উপর দৌড়ে চলছো,
মনে রেখ, তোমাকে কিন্তু
আমার পেটের ভেতরই আসতে হবে।
২.
তুমি আমার উপর হতে
হারাম খেয়ে চলছো, মনে রেখো, তোমাকে
আমার পেটের ভেতর পোকা-মাকড়
ভক্ষণ করবে।
৩.
তুমি আমার উপর হতে
আল্লাহপাক! এর নাফরমানি করছো, মনে রেখ, তোমাকে
আমার পেটের ভেতর তার শাস্তিভোগ
করতে হবে।
৪.
তুমি আমার পিঠের উপরে
চলাচলের পর হাসছো, মনে
রেখ, আমার পেটের ভেতর
তোমাকে কান্নাকাটি করে কাটাতে হবে।
৫.
আমার উপরে হতে তুমি
অহংকার ও দাম্ভিকতা প্রকাশ
করছো, স্মরণ রেখ, আমার পেটের
ভেতর তুমি অপমানিত হবে।
৬.
আমার উপর তুমি হারাম
মাল জমা করছো, মনে
রেখ, আমার ভেতর তুমি
গলে যাবে।
৭.
আমার পিঠের উপর প্রফুল্ল মনে
চলছো, মনে রেখ, আমার
ভেতর তুমি
অন্ধকারে
থাকবে।
৮.
আমার উপরিভাগে তুমি তোমার দলবল
নিয়ে চলাফেরা করছো কিন্তু আমার
ভেতর তুমি একাকী থাকবে।
৯.
হে আদম সন্তান! আমার
উপর তুমি আনন্দে বিভোর
কিন্তু আমার ভেতর দুঃখিত
ও চিন্তান্বিত থাকবে।
দেখলাম আগুনে
জ্বলন্ত
এক
ব্যক্তি
একটি
কবর
হতে
বের
হলো
হাদীসের
অপর এক বর্ণনায় এসেছে,
হোবায়রিশ ইন রিবাব রা.
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: একবার
আমি জাহফাহর রাস্তায় আছয়া নামক স্থানের নিকট
দিয়ে পথ চলছিলাম। আমি
দেখলাম আগুনে জ্বলন্ত এক ব্যক্তি একটি
কবর হতে বের হলো।
তার গর্দানে লোহার জিঞ্জির, সে আমার নিকট
পানি চাইল। ইতিমধ্যে ঐ কবর হতে
অন্য একজন ব্যক্তি বের
হলো সে বলল: এ
কাফিরকে পানি দিও না।
মাগরিব ও
এশার
নামায
পড়ে
উটনীতে
আরোহন
অতপর
সে প্রথমোক্ত ব্যক্তিকে ধরে ফেরত নিয়ে
গেল। হোবায়রিশ রা. এর বর্ণনা
যে, ঐ ঘটনা দেখে
আমার উটনী ভয়ে আমার
হাত হতে ফসকে যাওয়ার
উপক্রম হলো। আমি সেখানে
অবস্থান করে মাগরিব ও
এশার নামায পড়ে উটনীতে আরোহন
করে মদীনায় আসলাম।
কবরের আজাব
কেন
হয়
ওমর
রাঃ এর নিকট এ ঘটনা
বর্ণনা করলাম। এটি শ্রবণ করে
তিনি বললেন: হে হোবায়রিশ! তুমি
তো সত্যবাদিতায় বিখ্যাত কিন্তু তুমি তো এমন
একটি সংবাদ প্রদান করেছ যার তথ্য
উদ্ঘাটনের খুবই আবশ্যকতা দেখা
দিয়েছে। সুতরাং ওমর রা. স্থানের
আশে পাশের বয়স্ক লোকদেরকে আহ্বান করলেন।
যারা
অন্ধকার যুগের অবস্থা সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে অবগত। ঐ সমস্ত প্রাচীন
লোকদের সম্মুখে হোবায়রিশ রাঃ কে উপস্থিত করে এ পূর্ণ
ঘটনাটি ব্যক্ত করলে তারা এ
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলল: আমিরুল
মুমিনীন ঐ কবরস্থ ব্যক্তিটি
বনু গাফ্ফারের ও অন্ধকার যুগে
মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি।
সে মেহমানের
কোন
হক
আদায়
করতো
না
সে
মেহমানের কোন হক আদায়
করতো না। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক
ইব্ন আসাকীর রহ.
হতে বর্ণিত, সাদকাহ ইব্ ইয়াজিদ রহ.
বলেন: ত্রিপলির এক উচ্চস্থানে পাশাপাশি
তিনটি কবরে দেখতে পেলাম:
মৃত্যু অনিবার্য
সত্য
প্রথম
কবরের উপর লেখা ছিল:
যে ব্যক্তি এ কথা বিশ্বাস
করে যে, মৃত্যু অনিবার্য
সত্য ও আমার করতলগত
দেশ ও রাষ্ট্র অতি
শীঘ্রই আমর নিকট হতে
কেড়ে নেয়া হবে ও আমাকে
একদিন কবরে দাফন করা
হবে মৃত্যু ও পরকালের ভয়ে
দুনিয়ার জীবনে সে কখনো শান্তি
লাভ করতে পারে না।
হাশরের ময়দানে
আল্লাহপাকের
সামনে
জবাবদিহি
করতে
হবে
দ্বিতীয়
কবরের গায়ে লেখা ছিল: যে
ব্যক্তি এ কথা জানে
যে, হাশরের ময়দানে মহান আল্লাহপাক! এর সামনে
জবাবদিহি করতে হবে ও
সবাইকে কর্মফল ভোগ করতে হবে,
সে তার জীবদ্দশায় কিছুতেই
সুখ ভোগ করতে পারেনা।
কবর আমাদেরকে
মাটির
সাথে
মিশিয়ে
দেবে
তৃতীয়
কবরের গায়ে লেখা ছিল: যে
ব্যক্তি এ কথা জানে
যে, কবর আমাদের যৌবনকে
মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে
ও দেহের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে খন্ড-বিখন্ড করে খেয়ে ফেলবে,
স্বীয় জীবনে সে কখনো আরাম
উপভোগ করতে পারবে না।
কবরের লিপি
তিনটি
কবরের পাশাপাশি অবস্থান ও সেই অভূতপূর্ব
‘কবরের লিপি’ দেখে আমি অত্যন্ত
বিস্মিত হলাম। অতপর পাশ্ববর্তী এক
গ্রামে গিয়ে জনৈক বৃদ্ধের নিকট
ঐ কবরের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। বৃদ্ধ জানালো: উক্ত কবরবাসীরা ছিল
তিন ভাই।
কবরের আজাব
ছবি
তাদের
প্রথমজন ছিল বাদশাহের সেনাপতি।
দ্বিতীয়জন ছিল একজন ধনাঢ্য
বণিক। আর তৃতীয়জন ছিল
দরবেশ। দরবেশ দিবারাত্র সব সময় ইবাদত
বন্দেগীতে মশগুল থাকতো। দরবেশের মৃত্যুকালে তার ভ্রতৃদ্বয় এতে
তাকে বলল: তোমার যদি
কোন অসীয়ত থাকে তাহলে তা
বলতে পারো। দরবেশ বলল: আমার নিকট
কোন ধন-সম্পদ নেই
ও আমার কোন ঋণও
নেই। তাই অসীয়ত করারও
তেমন কিছুই নেই।
তবে
আমি তোমাদেরকে এ বিষয়ে অসীয়ত
করে যাচ্ছি যে, আমার মৃত্যুর
পর তোমরা আমাকে ত্রিপলির উঁচু টিলায় দাফন
করবে ও আমার কবরের
গায়ে এ কথাগুলো লিখে
দিবে। “যে ব্যক্তি এ
কথা জানে যে, হাশরের
ময়দানে মহান আল্লাহপাক! এর সামনে
জবাবদিহি করতে হবে ও
সবাইকে কর্মফল ভোগ করতে হবে,
সে তার জীবদ্দশায় কিছুতেই
সুখ ভোগ করতে পারে
না।”
দরবেশের মৃত্যু
হলে
যথাস্থানে
সমাহিত
করা হলো
অতপর
ক্রমান্বয়ে তিনদিন আমার কবর যিয়ারত
করবে। ফলে তোমরা আমার
কবর হতে সদুপদেশ অর্জন
করতে পারবে। দরবেশের মৃত্যু হলে তাকে যথাস্থানে
সমাহিত করতঃ কবরের গায়ে
তার আদিষ্ট কথাগুলো যথারীতি লিখে দেয়া হলো।
তিনদিন পর্যন্ত
তার
কবর
যিয়ারত
করল
এরপর
তার জীবিত দুই ভাই একাধারে
তিনদিন পর্যন্ত তার কবর যিয়ারত
করল। তৃতীয় দিবসে সেনাপতি কবর যিয়ারত করে
ফেরার পথে সে কবরের
ভেতর হতে দেয়াল ধ্বসে
পড়ার মত এক বিকট
আওয়াজ শুনতে পেলো।
ফলে
ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে কাঁপতে কাঁপতে
দ্রুত তার গৃহের দিকে
প্রত্যাবর্তন করলো। রাতে তার সেই
মৃত ভাইকে স্বপ্নে দেখে সে জিজ্ঞেস
করল: আজ আমি তোমার
কবরে যিয়ারতকালে কবর হতে যে
বিকট শব্দ ভেসে আসছিল
সেটা কীসের আওয়াজ?
আজাবের ফেরেশতা
সে
জবাবে বলল: জনৈক আজাবের
ফেরেশতা এসে তখন আমাকে
ধমকিয়ে জিজ্ঞেস করছিল: একদা এক উৎপীড়িত
ব্যক্তি এসে যখন তোমার
নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছিল তখন তুমি তাকে
সাহায্য করনি কেন? এ
কথা বলে সে এক
মজবুত ও ভারী লোহার
মুগুর দ্বারা বেদম প্রহার করছিলো।
তুমি কবর যিয়ারতকালে ফেরেশতাকর্তৃক
আমাকে মুগুর দ্বারা পিটানোর সেই ভয়ঙ্কর শব্দই
ভেসে আসছিল।
সবকিছু বিসর্জন
দিয়ে
নির্জন
জঙ্গলে
ঠাঁই
নিল
এ
স্বপ্ন দেখার পর সেনাপতি সকাল
বেলা তার অপর ভাই
ও নিকটতমবন্ধু বান্ধবকে ডেকে এনে বলল:
আমি আর তোমাদের মাঝে
থাকতে চাই না। বাদশাহের
অধীনে চাকুরী করারও কোন প্রয়োজন নেই।
এ কথা বলে সে
সকল প্রকার আরাম আয়েশ পরিত্যাগ
করল ও পার্থিব ধন-সম্পদ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে এক নির্জন জঙ্গলে
গিয়ে ঠাঁই নিল।
ইবাদত-বন্দেগী
করতে
থাকল
সে
সেখানে ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকল। তার
ইন্তিকালের সময় তার ব্যবসায়ী
ভাই এসে তাকে বলল:
তোমার কোন অসীয়ত থাকলে
বলতে পার। দরবেশের ন্যায়
সেও বলল আমার কোন
ধন-সম্পদ নেই। তবে আমার
মৃত্যুর পর আমার কবরের
গায়ে তুমি এই কথাটি
লিখে দিবে:
কবরের আজাব
“যে
ব্যক্তি এ কথা বিশ্বাস
করে যে, মৃত্যু অনিবার্য
সত্য ও আমার করতলগত
দেশ ও রাষ্ট্র অতি
শীঘ্রই আমার নিকট হতে
কেড়ে নেয়া হবে ও আমাকে
একদিন কবরে দাফন করা
হবে মৃত্যু ও পরকালের ভয়ে
দুনিয়ার জীবনে সে কখনো শান্তি
লাভ করতে পারে না।"
অতপর ক্রমান্বয়ে তিনদিন আমার কবর যিয়ারত
করবে।
সেনাপতির
মৃত্যুর পর তার কবরে
উল্লিখিত কথাগুলো লিখে দেয়া হল।
বণিক যে ভাই ছিল
সে একাধারে তিনদিন এসে তার কবরে
যিয়ারত করল। শেষদিন কবরে
যিয়ারত করে চলে যাওয়ার
সময় সে সেনাপতির কবরে
একটি ভয়ঙ্কর শব্দ শুনতে পেল।
সেনাপতির কবর হতে এ
ভীতিপ্রদ আওয়াজ ভেসে আসতে শুনে
সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে কাঁপতে কাঁপতে
তার বাড়িতে ফিরে গেল। রাতের
বেলায় সে সেনাপতিকে স্বপ্নে
দেখে সে
অবসর সময়কে মূল্যবান মনে করো
জিজ্ঞেস করলো: তুমি কেমন আছ? সেনাপতি জবাব দিল, ভালই আছি, তাওবা করায় আমার গোনাহ মাফ হয়ে গেছে। ফলে এখন আমি সুখেই আছি। সে তাকে আবারো বলল: দরবেশ ভাই কেমন আছে? সেনাপতি বলল: তিনি নেককারদের সঙ্গে বেহেশতের উচুস্থানে সমাসীন রয়েছে।
বণিক এবার নিজের
কথা জিজ্ঞেস করে বলল: আচ্ছা
তাহলে আমার অবস্থা কী
হবে? সেনাপতি জবাব দিল: প্রত্যেককেই
নিজের কর্মফল ভোগ করতে হবে।
তুমি
অবসর
সময়কে
মূল্যবান
মনে
করো
ও
নেক
আমল
দ্বারা
পরকালের
পাথেয়
সংগ্রহ
করো।
কবর যৌবনকে মাটির
সাথে
মিশিয়ে
দেবে
পরদিন
সকাল বেলা বণিকও দুনিয়ার
সম্পর্ক ত্যাগ করলো। সে তার যাবতীয়
ধন-সম্পদ গরীব দঃখী মানুষকে
দান করে দিয়ে আল্লাহ্
তা'আলার ইবাদতে মশগুল
হল। বণিকের মৃত্যুকালে তার ছেলে এসে
বলল: হে আমার পিতা!
আপনি কিছু অসীয়ত করে
যান।
বণিক
বলল: আমার তো কোন
ধন-সম্পদ নেই, যার জন্য
আমি তোমাকে অসীয়ত করতে পারি। তবে
আমার মৃত্যুর পর আমার কবরের
গায়ে “যে ব্যক্তি এ
কথা জানে যে, কবর
আমাদের যৌবনকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে
ও দেহের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে খন্ড-বিখন্ড করে খেয়ে ফেলবে,
স্বীয়
জীবনে সে কখনো আরাম
উপভোগ করতে পারবে না।”-এ কথাটি লিখে
দিবে। আর অতি শীঘ্রই
তোমাকেও কবরে যেতে হবে।
তাই দুনিয়াদারদের মতো নিশ্চিন্ত থেকো
না। তোমাকে অবশ্যই কবরের গৃহে আসতে হবে।
তুমি অতিসত্তর প্রস্তুত হও। শীঘ্রই প্রস্তুত
হও। অতি শীঘ্রই প্রস্তুত
হও। (ইবন আসাকীর, নূরুসসুদূর
ফী শারহিল কুবৃর)
সংগৃহীতঃ মৃত্যুর পরে অনন্ত জীবন
লেখকঃ মুহাম্মদ ইকবাল কীলানী
পোস্ট ট্যাগঃ