জান্নাত লাভের দোয়া
জান্নাত লাভের দোয়া
“আল্লহুম্মা
ইন্নী আছ্আলুকাল জান্নাহ, ওয়া আ’ঊযুবিকা মিনান্নার”
অর্থ:
‘হে আল্লাহপাক আমি তোমার নিকট
জান্নাত আশা করছি ও
জাহান্নামের ভয়াবহতা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।’
নবিজী
(সাঃ) বলেন, কোনো ব্যক্তি আল্লাহপাকের
কাছে ৩ বার জান্নাত প্রার্থনা করলে জান্নাত বলে
ওঠে, হে আল্লাহপাক! তুমি সেই ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। (সুনানে তিরমিজি)
জান্নাত
লাভের দোয়া শিখার পর আমরা সুন্দরতম সেই শ্রেষ্ঠ বিলাসবহুল জান্নাতের নিয়ামত
আল কাউসার
নদী
আল্লাহ
তার স্বীয় দয়া ও অনুগ্রহের
মাধ্যমে আমাদেরকে তা থেকে পানি
পান করান
কাউসার
জান্নাতের একটি নদী যা
আল্লাহ শুধু রাসুলুল্লাহ (সাঃ) (সাঃ) (সাঃ) কে তা দিবেন।
কাউসার নদী জান্নাতের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে
উন্নত নদী।
অর্থ:
“আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: (মেরাজের সময়) আমি জান্নাত দেখতেছিলাম,
সেখানে আমি একটি নদী
দেখতে পেলাম যার উভয় তীরে
মোতি খচিত গম্বুজ রয়েছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম হে জিবরাঈল! এগুলো
কি?
সে
বললো: এ হলো কাউসার
যা আপনাকে আপনার প্রভু দিয়েছেন। আর তার মাটি
বা সুগন্ধি মেশক আম্বরের ন্যায়
(বুখারী ৮/৬৫৮১)
আল কাউসার
নদীর
উভয়
তীর
স্বর্ণ
নির্মিত
কাউসার
নদীর উভয় তীর স্বর্ণ
নির্মিত, তার কঙ্করসমূহ মোতি
ও ইয়াকুতের। আর মাটি মেশকের
চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়:
অর্থ:
“আবদুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন: কাউসার জান্নাতের একটি নদী, যার
উভয় তীর স্বর্ণ নির্মিত,
তার পানি ইয়াকুত ও
মোতির উপর প্রবাহমান। তার
মাটি মেশকের চেয়েও বেশি সুগন্ধিময়, তার
পানি মধুর চেয়ে অধিক
মিষ্টি এবং বরফের চেয়ে
অধিক সাদা। (তিরমিযী)
আল কাউসার
নদীতে
উটের
গর্দানের
ন্যায়
উঁচু
প্রাণী
কাউসার
নদীতে উটের গর্দানের ন্যায়
উঁচু প্রাণী থাকবে, যা ভক্ষণে জান্নাতীরা
তৃপ্তিলাভ করবে:
উল্লেখ্য
যে হাউজে কাউসার এবং কাউসার নদী
পৃথক জিনিস, কাউসার নদী জান্নাতের ভিতরে
থাকবে, আর হাউজে কাউসার
জান্নাতের বাহিরে হাশরের মাঠে থাকবে। যেখানে
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মিম্বরে আসন গ্রহণ করে
স্বীয় হস্তে ঈমানদারদেরকে পানি পান করিয়ে
তাদের পিপাসা মিটাবেন। (আল্লাহই এ ব্যাপারে সর্বাধিক
অবগত)
হাউজে কাউসার
পানি
পান
হাউজে
কাউসার পানি পান করানোর
দায়িত্ব স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পালন করবেন:
ইয়ামেনবাসীদের
সম্মানে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) অন্যদেরকে হাউজে কাউসার থেকে দূর করে
দিবেন:
হাউজে
কাউসারের প্রশস্ততা মদীনা এবং আম্মানের দূরত্বের
সমান। (প্রায় এক হাজার কি.মি.) হাউজে কাউসারের
পানি দুধের চেয়ে সাদা এবং মধুর
চেয়েও মিষ্টি হবে:
তিনি
বললেন: মদীনা থেকে ওমানের দূরত্বের
সমান। এরপর হাউজের পানি
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে,
তা কেমন হবে? তিনি
বললেন: দুধের চেয়ে অধিক সাদা, মধুর
চেয়ে অধিক মিষ্টি, এরপর
তিনি বললেন আমার হাউজে জান্নাত
থেকে দু'টি নালা
প্রবাহিত হবে, তার একটি
হবে স্বর্ণের, অপরটি হবে রূপার। (মুসলিম
৪/২৩০১)
নোট:
আম্মান জর্ডানের রাজধানী, যা মদীনা থেকে
এক হাজার কি.মি. দূরে।
অন্যান্য হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়
যে, হাউজে কাউসারের চতুর্পার্শ্ব সমান সমান। নবী
সাঃ বলেন: “হাউজের প্রশস্ততা তার দৈর্ঘ্যের সমান”
(তিরমিযী)
হাউজে কাউসারের
কিনারে
সোনা-চাঁদির
গ্লাস
হাউজে
কাউসারের কিনারে সোনা-চাঁদির গ্লাস
থাকবে যার সংখ্যা হবে
আকাশের তারকার সমান
কিয়ামতে রাসূলুল্লাহ সাঃ
এর
মিম্বর
হাউজে
কাউসারে
কিয়ামতের
দিন রাসূলুল্লাহ সাঃ এর মিম্বর হাউজে
কাউসারের পার্শ্বে রাখা হবে। তার
ওপর আরোহণ করে তিনি তাঁর
উম্মতদেরকে পানি পান করাবেন:
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ আমার ঘর
ও মিম্বরের মাঝে যে স্থানটি
আছে তা জান্নাতের বাগানসমূহের
মধ্যে একটি বাগান। আর
আমার মিম্বর (কিয়ামতের দিন) আমার হাউজের
পার্শ্বে রাখা হবে।” (বুখারী
২/১১৯৬)
একবার হাউজে
কাউসার
পানি
পান
করবে
যে
ব্যক্তি একবার হাউজে কাউসারের পানি পান করবে
তার আর কখনো পানির
পিপাসা
হবে না:
অর্থ:
“আবদুল্লাহ বিন ওমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেছেন: জান্নাতে তোমাদের সামনে একটি হাউজ থাকবে,
যার একটি কঙ্কর যারবা
থেকে আজরার (সিরিয়ার দু'টি শহরের
নাম) মাঝের দূরত্বের সমান হবে। যার
পার্শ্বে আকাশের তারকা সংখ্যক গ্লাস রাখা হবে।
যে
ব্যক্তি ওখান থেকে একবার
পানি পান করবে সে
আর কখনো পিপাসিত হবে
না।” (মুসলিম ৪/২২৯৯)
হাউজে কাউসারের
পানি
সর্বপ্রথম
পান
করবে
মুহাজিরগণ
হাউজে
কাউসারের পানি সর্বপ্রথম পান
করবে গরীব মুহাজিরগণ
(মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত
কারীরা):
কিয়ামতের দিন
প্রত্যেক
নবীকে
হাউজে
কাউসার
দেয়া
হবে
কিয়ামতের
দিন প্রত্যেক নবীকে হাউজ দেয়া হবে
যা থেকে তাঁর উম্মতরা
পানি পান করবে
রাসূলুল্লাহ
-এর হাউজে আগন্তুকদের সংখ্যা অন্যান্য নবীদের উম্মতদের তুলনায় অধিক হবে:
অর্থ:
“সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে বর্ণনা
করেছেন: নিশ্চয়ই প্রত্যেক নবীর জন্য একটি
করে হাউজ থাকবে, আর
প্রত্যেক নবী পরস্পরের সাথে
গৌরব করবে যে, কার
হাউজে পানি পানকারীর সংখ্যা
বেশি। আমি আশা করছি
যে আমার হাউজে আগন্তকদের
সংখ্যা বেশি হবে।” (তিরমিযী
৪/২৪৪৩)
হাউজে কাউসারের
পাশে
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)
হাউজে
কাউসারের পাশে রাসূলুল্লাহ সাঃ তাঁর
উম্মতদের সামনে থাকবেন: বিদআতীরা রাসূলুল্লাহ সাঃ -এর হাউজ
থেকে বিতাড়িত হবে:
অর্থ:
“আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ
থেকে বর্ণনা করেছেন: তিনি বলেন আমি
হাউজে কাউসারের পাশে তোমাদের আগে
থাকবো। তোমাদের মধ্যে কিছু লোক সেখানে
আসবে, অতঃপর তাদেরকে আমার কাছ থেকে
দূরে সরিয়ে দেয়া হবে, আমি বলবো:
হে আমার প্রভু! এরাতো
আমার উম্মত। বলা হবে আপনি
জানেন না যে, আপনার
পরে তারা কি কি
বিদআত চালু করেছে।” (বুখারী
৯/৭০৪৯)
হাউজে কাউসারের
নিকট
কাফিররা
এসে
পানি
পান
কাফিররা
হাউজে কাউসারের নিকট এসে পানি
পান করতে চাইবে কিন্তু
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আবার তাদেরকে দূরে
সরিয়ে দিবেন
রাসূলুল্লাহর
(সাঃ) তাঁর উম্মতদেরকে ওযুর কারণে উজ্জ্বল
হাত ও কপাল দেখে
চিনতে পারবেন:
হাউজে কাউসার
থেকে অমুসলিমদেরকে দূর করে
দিব
তাদের
পাল থেকে অন্য মালিকের
উটকে তাড়িয়ে দেয়। জিজ্ঞেস করা হলো ইয়া
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)! আপনি আমাদেরকে চিনবেন?
তিনি বললেন: হ্যাঁ, তোমরা আমার নিকট আসবে
এমতাবস্থায় যে অযুর কারণে
তোমাদের হাত, পা, কপাল
ইত্যাদি চমকাতে থাকবে। এ গুণ তোমরা
ব্যতীত অন্য কোনো উম্মতের
হবে না।” (ইবনে মাজা)
জান্নাতের প্রথম
খাবার
কি
জান্নাতীদের প্রথম
খানা
হবে
মাছ,
এর
পরবর্তী
খাবার
হবে
গরুর
গোশ্ত
জান্নাতীদের সর্বপ্রথম
পানীয়
হবে
সালসাবীল
নামক
কুপের
পানি:
অর্থ:
“রাসূলুল্লাহ সাঃ এর গোলাম সাওবান
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট দাঁড়িয়ে
ছিলাম, ইতিমধ্যে ইহুদীদের পাদ্রীদের মধ্য থেকে একজন
পাদ্রী আসলো এবং জিজ্ঞেস
করল যে, যেদিন আকাশ
ও জমিন প্রথম পরিবর্তন
করা হবে তখন মানুষ
কোথায় থাকবে? রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, পুলসিরাতের
নিকটবর্তী এক অন্ধকার স্থানে।
সর্বপ্রথম কে
পুলসিরাত
পার
হবে
অতঃপর
ইহুদী আলেম জিজ্ঞেস করলো,
সর্বপ্রথম কে পুলসিরাত পার
হবে? তিনি বললেন: গরীব মুহাজিরগণ। (মক্কা থেকে
মদীনায় হিজরত কারীরা) ঐ ইহুদী পাদ্রী
আবার জিজ্ঞেস করলো, জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করার পর সর্বপ্রথম
তাদেরকে কি খাবার পরিবেশন
করা হবে?
জান্নাতে মাছের
কলিজা
ভুনা
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বললেন: মাছের কলিজা,
ইহুদী জিজ্ঞেস করলো এরপর কি
পরিবেশন করা হবে? রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বললেন: এরপর জান্নাতীদের জন্য
জান্নাতে পালিত গরুর গোশত পরিবেশন
করা হবে। এরপর ইহুদী
পাদ্রী জিজ্ঞেস করলো খাওয়ার পর
পানীয় কি পরিবেশন করা
হবে?
বেহেস্তি খাবার
আমাদের বর্তমান
এ
পৃথিবী
জান্নাতীদের
রুটি
হবে
কিয়ামতের
দিন পৃথিবী একটি রুটির মত
হবে, আল্লাহপাক তার নিজ হাতে এমনভাবে
উলট পালট করবেন যেমন
তোমাদের কেউ সফররত অবস্থায়
তার রুটিকে উলট পালট করে।
আর ঐ রুটি দিয়ে
জান্নাতীদের মেহমানদারী করা হবে।” (বুখারী
৮/৬৫২০, মুসলিম)
জান্নাতের পানীয়
তাসনীম
হবে শুধু বিশেষ বান্দার
মাসআলা-১৯৪: জান্নাতে সবচেয়ে
উন্নতমানের
পানীয়
হবে
তাসনীম
যা শুধু আল্লাহর বিশেষ
বান্দাদেরকে পরিবেশন করা হবে:
মাসআলা-১৯৫: জান্নাতের স্বচ্ছ ও
পরিষ্কার
শরাব
“রাহিক”
পানে সমস্ত জান্নাতীরা আত্মতৃপ্তি লাভ করবে: জান্নাতীদের
সেবায় “রাহিকের” মুখবদ্ধ পান পাত্র পেশ
করা হবে: “রাহিক” পান করার পর
জান্নাতীরা মুখে মেশকের স্বাদ
অনুভব হবে:
জান্নাতের সাদা
পানীয়
থাকবে
জান্নাতে
মাসাআলা-২০০: জান্নাতের শরাব
পান করার পর কোনো
প্রকার মাতলামী ভাব দেখা দিবে
না:
অর্থ:
তাদের চারপাশে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন
করা হবে বিশুদ্ধ সুরাপাত্র,
সাদা, পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। তাতে
থাকবে না ক্ষতিকর কিছু
এবং তারা এগুলো দ্বারা
মাতালও হবে না। (সূরা
সাফ্ফাত ৪৫-৪৭)
অর্থ:
“তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রৌপ্য
পাত্র এবং স্ফটিকের মতো
স্বচ্ছ পান পাত্রে। রুপালী
স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা তা যথাযথ পরিমাণে
পূর্ণ করবে।” (সূরা দাহর ১৫-১৬)
জান্নাতীদের সেবায়
ত্বাহুর
শরাব
পেশ
করা
হবে
জান্নাতীদেরকে
এমন শরাব পান করানো
হবে যার মধ্যে আদার
স্বাদ থাকবে: জান্নাতীদের সেবায় এমন শরাবও পেশ
করা হবে যার মধ্যে
কাফুরের স্বাদ থাকবে: জান্নাতীদের পানের জন্য সু স্বাদু
পানি, সু মিষ্টি দুধ,
সু স্বাদু শরাব, পরিষ্কার স্বচ্ছ মধুর নদীও জান্নাতে
বিদ্যমান থাকবে:
জান্নাতীরা তীব্র
গতিসম্পন্ন
ঝর্ণার
পানি
লাভ
করবে
অর্থ:
তথায় থাকবে প্রবাহিত ঝর্ণা” (সূরা গাসিয়া ১২)
জান্নাতের
শরাব পানে জান্নাতীদের মাথায়
কোনো প্রতিক্রিয়া হবে না।
জান্নাতের ফলের
নাম
পছন্দনীয়
ফল
জান্নাতীদের
পছন্দনীয় ফল তাদের রুচি
অনুযায়ী তাদের সামনে পেশ করা হবে:
পছন্দনীয় পাখির গোশতও তাদের জন্য বিদ্যমান থাকবে:
জান্নাতের ফলের
নাম
জান্নাতীদের
মেহমানদারীর জন্য অন্যান্য ফল
ব্যতীত খেজুর,
আঙ্গুর,
আনার,
বরই,
আনজীর
ইত্যাদি ফলও থাকবে ৷
হাউজে কাউসারে উড়ে বেড়ানো পাখির
গোশত ভক্ষণে জান্নাতীরা তৃপ্তিলাভ করবে: সকাল সন্ধ্যায় জান্নাতীদের
খাবার পরিবেশনের ধারা বাহিকতা চালু
থাকবে:
জান্নাতে প্রত্যেক
ব্যক্তিকে
একশ
লোকের
বেহেস্তি খাবারের শক্তি
দেয়া
হবে
তাদের
পায়খানা প্রস্রাবের অবস্থা হবে এই যে,
তাদের শরীর থেকে ঘাম
বের হবে ফলে তাদের
পেট আবার পূর্বের অবস্থায়
ফিরে আসবে।” (ত্বাবারানী)
বেহেস্তি খাবার ঘাম
ও
ঢেঁকুরের
মাধ্যমে
হজম
হয়ে
যাবে
অর্থ:
স্বর্ণখচিত থালা ও পানপাত্র
নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে, সেখানে
মন যা চায় আর
যাতে চোখ তৃপ্ত হয়
তা-ই থাকবে এবং
সেখানে তোমরা হবে স্থায়ী।
আর
এটিই জান্নাত,
নিজদের আমলের ফলস্বরূপ তোমাদেরকে এর অধিকারী করা
হয়েছে। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে অনেক
ফলমূল, যা থেকে তোমরা
খাবে। (সূরা যুখরূফ ৭১-৭৩)
জান্নাতি পোশাক ও অলংকার
জান্নাতীরা
পাতলা ও মোটা সবুজ
রেশমের কাপড় পরিধান করবে: জান্নাতীরা হাতে সোনার অলংকার
ব্যবহার করবে:
অর্থ:
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে
এবং সৎকাজ করেছে, নিশ্চয় আমি এমন কারো
প্রতিদান নষ্ট করবো না,
যে সুকর্ম করেছে। এরাই তারা, যাদের
জন্য রয়েছে স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে
প্রবাহিত হয় নদীসমূহ। সেখানে
তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণের
চুড়ি দিয়ে এবং তারা পরিধান
করবে মিহি ও পুরু
সিল্কের সবুজ পোশাক। তারা
সেখানে (থাকবে) আসনে হেলান দিয়ে।
প্রতিদান এবং কী সুন্দর
উত্তম বিশ্রামস্থল।
(সূরা কাহাফ ৩০-৩১)
জান্নাতি পোশাক অলংকার
জান্নাতীরা
ব্যবহার
করবে
খাঁটি
রেশমী কাপড়ের পোশাক, খাঁটি স্বর্ণের অলংকার, খাঁটি মোতির অলংকার এবং মোতি মিশ্রিত
স্বর্ণের অলংকারও জান্নাতীরা ব্যবহার করবে: যেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের। (সূরা
হাজ্জ ২৩)
চিরস্থায়ী জান্নাত
অর্থ:
চিরস্থায়ী জান্নাত, এতে তারা প্রবেশ
করবে। যেখানে তাদেরকে স্বর্ণের চুড়ি ও মুক্তা দ্বারা
অলঙ্কৃত করা হবে এবং
সেখানে তাদের পোশাক হবে রেশমের। (সূরা
ফাত্ত্বির ৩৩)
মোটা
ও পাতলা রেশম ব্যতীত সুন্দুস
এবং ইস্তেবরাক নামক রেশমও জান্নাতীরা
ব্যবহার করবে:
হুরদের দেহের আকর্ষণ
অর্থ:
নিশ্চয় মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে, বাগ-বাগিচা ও
ঝর্নাধারার মধ্যে, তারা পরিধান করবে
পাতলা ও পুরু রেশমী
বস্ত্র এবং বসবে মুখোমুখী
হয়ে। এরূপই ঘটবে, আর আমি তাদেরকে
বিয়ে দেব ডাগর নয়না
হূরদের সাথে। সেখানে তারা প্রশান্তচিত্তে সকল
প্রকারের ফলমূল আনতে বলবে।
প্রথম
মৃত্যুর পর সেখানে তারা
আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। আর
তিনি তাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা
করবেন। তোমার রবের অনুগ্রহস্বরূপ, এটাই
তো মহা সাফল্য। (সূরা
দুখান ৫১-৫৭)
জান্নাতি পোশাক ও চাঁদির
অলংকারও
ব্যবহার
করবে
অর্থ:
আর তাদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে চিরকিশোরেরা; তুমি
তাদেরকে দেখলে বিক্ষিপ্ত মুক্তা মনে করবে। আর
তুমি যখন দেখবে তুমি
সেখানে দেখতে পাবে স্বাচ্ছন্দ্য ও
বিরাট সাম্রাজ্য। তাদের উপর থাকবে সবুজ
ও মিহি রেশমের পোশাক
এবং
মোটা রেশমের পোশাক, আর তাদেরকে পরিধান
করানো হবে রূপার চুড়ি
এবং তাদের রব তাদেরকে পান
করাবেন পবিত্র পানীয়। (তাদেরকে বলা হবে) ‘এটিই
তোমাদের পুরস্কার; আর তোমাদের প্রচেষ্টা
ছিল প্রশংসাযোগ্য।' (সূরা দাহর ১৯-২২)
জান্নাতি পোশাক
কখনো
পুরাতন
হবে
না
জান্নাতী
মহিলারা একই সাথে সত্তর
জোড়া পোশাক পরিধান করে সজ্জিত হবে,
যা এতো উন্নতমানের হবে
যে, এর ভিতর দিয়ে
তাদের পায়ের গোছার মজ্জা দৃষ্টিগোচর হবে। জান্নাতী মহিলাদের
উড়না মান ও দামের
দিক থেকে দুনিয়ার সমস্ত
সম্পদ থেকে মূল্যবান হবে:
জান্নাতি পোশাক তৈরী
করা
হবে
খেজুরের
ডালের সুক্ষ্ম সূতা দিয়ে জান্নাতীদের
পোশাক তৈরী করা হবে
যা হবে লাল স্বর্ণের:
জান্নাতীরা উন্নতমানের রেশমের রুমাল ব্যবহার করবে: জান্নাতে সাদ বিন মুয়াযের
রুমাল এর চেয়েও উন্নত
মানের।
অযুর পানি
যেখানে
যেখানে
পৌঁছে
ওখান
পর্যন্ত
জান্নাতীদেরকে
অলংকার
পরানো
হবে
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: আমি আমার বন্ধু
রাসূলুল্লাহ সাঃ-কে বলতে
শুনেছি তিনি বলেন: মু'মিনকে ঐ পর্যন্ত অলংকার
পরানো হবে যে পর্যন্ত
অযুর পানি পৌছে।" (মুসলিম)
জান্নাতি পোশাক অলংকার
জান্নাতীদের
ব্যবহার করা অলংকারের যে
কোনো একটির চমকের সামনে সূর্যের আলো আড়াল হয়ে
যাবে:
অর্থ:
“সাদ বিন আবু ওক্কাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন: আমি আমার বন্ধু
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -কে বলতে শুনেছি
তিনি বলেন: জান্নাতের জিনিস সমূহের মধ্য থেকে নখ
বরাবর কোনো জিনিস যদি
পৃথিবীতে প্রকাশিত হয়, তাহলে আকাশ
ও যমীনের মাঝে যাকিছু আছে
তাকে আলোকময় করে তুলবে। আর
যদি একজন জান্নাতী পুরুষ
তার অলংকারসহ পৃথিবীকে উকি দেয়, তাহলে
সূর্যের আলো এমনভাবে আড়াল
হয়ে যাবে যেভাবে সূর্যের
আলো তারকার আলোকে আড়াল করে দেয়।” (তিরমিযী
৪/২৫৩৮)
জান্নাতীদের অলংকারের
মধ্যে
ব্যবহৃত
একটি
মোতি
পৃথিবীর
সমস্ত
সম্পদ
থেকে
মূল্যবান:
অর্থ:
“মেকদাদ বিন মা'দী
কারিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: শহীদের
জন্য আল্লাহর নিকট ছয়টি ফযীলত
রয়েছে,
শহীদ সাহাবীদের
জন্য
আল্লাহর
নিকট
ছয়টি
ফযীলত
রয়েছে
(১)
শহীদের সমস্ত গুনাহ মাফ, আর তার
শাহাদাতের সময়ই তাকে জান্নাতে তার
ঠিকানা দেখানো হয়।
(২)
কবরের আযাব থেকে তাকে
সংরক্ষণ করা হয়।
(৩)
কিয়ামতের দিন দুশ্চিন্তা থেকে
তাকে রক্ষা করা হবে।
(৪)
তার মাথায় সম্মানের এমন এক তাজ
রাখা হবে যার একটি
ইয়াকুত দুনিয়া ও তার মাঝে
বিদ্যমান প্রত্যেক জিনিসের চেয়ে মূল্যাবন হবে।
(৫)
জান্নাতে ৭২ জন হুরে
ইনের সাথে তার বিয়ে
হবে।
(৬)
আর সে তার সত্তর
জন নিকট আত্মীয়ের জন্য
সুপারিশ করবে।” (তিরমিযী)
পোস্ট ট্যাগঃ