জান্নাত নামের অর্থ কি
জান্নাত নামের অর্থ কি
আরবি
শব্দ জান্নাত অর্থ হলো রাজরাণী, মালীক, বছ,
নেত্রী ইত্যাদি। ইসলামিক এই নামটি অতি সুন্দর যা আপনার সন্তানের নামের ক্ষেত্রে
ব্যবহার করতে পারেন। ইসলামিক জান্নাত নামের অর্থ জানার পর আমরা জানবো মহামূল্যবান বেহেশতের
নাজ নেয়ামতসমূহের বর্ণনা নিচে সংক্ষিপ্তভাবে জানবো আজকের পোস্টে।
জান্নাতে সারি সারি
গালিচা
উজ্জ্বল
চেহারা, সর্বপ্রকার অনর্থক কথাবার্তা মুক্ত পরিবেশ, প্রবাহমান ঝর্ণা, সুউচ্চ আসন, সারি সারি
গালিচা এবং বিস্তৃত বিছানো
কার্পেট, এসবই জান্নাতের নেয়ামত
যা থেকে জান্নাতীরা উপকৃত
হবে:
অর্থ:
সেদিন অনেক চেহারা হবে
লাবণ্যময়। নিজেদের চেষ্টা-সাধনায় সন্তুষ্ট। সুউচ্চ জান্নাতে সেখানে তারা শুনবে না
কোন অসার বাক্য। সেখানে
থাকবে প্রবাহমান ঝর্ণাধারা, সেখানে থাকবে সুউচ্চ আসনসমূহ। আর প্রস্তুত পানপাত্রসমূহ।
আর সারি সারি বালিশসমূহ।
আর বিস্তৃত বিছানো কার্পেটরাজি। (সূরা গাশিয়া ৮-১৬)
জান্নাতে প্রবাহমান
পানির
ঝর্ণা
জান্নাতে
কণ্টকহীন কূল বৃক্ষ থাকবে।
আরো থাকবে কাঁদি কাঁদি কলা ও ঘন
এবং দীর্ঘ ছায়া। প্রবাহমান পানির ঝর্ণা, আনন্দ উদযাপনের স্থান:
জান্নাতী
লোকদের দুনিয়ার সতী স্ত্রীদেরকে আল্লাহ
দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করবেন যাদের মধ্যে নিম্নোক্ত তিনটি গুণ থাকবে। কুমারী,
স্বামীর সম বয়স্কা, প্রাণ
ভরে স্বামী ভক্তিপূর্ণ:
জান্নাতী রমণীগণ
অর্থ:
“যারা ডান দিকে থাকবে
তারা কত ভাগ্যবান। তারা
থাকবে কাঁটাবিহীন বরই বৃক্ষে এবং
কাঁদি কাঁদি কলায়। আর দীর্ঘ ছায়ায়
এবং প্রবাহমান ঝর্ণায় I আর প্রচুর ফলমূলের
মাঝে। যা শেষ হবার
নয় এবং নিষিদ্ধও নয়।
আরো থাকবে সমুন্নত শয্যায়। আমি জান্নাতী রমণীগণকে
বিশেষরূপে
সৃষ্টি
করেছি।
অতপর তাদেরকে চিরকুমারী। কামিনী, সমবয়স্কা। ডান দিকের লোকদের
জন্য ৷” (সূরা ওয়াকিয়া:
২৭-৩৮)
জান্নাতে সমস্ত
কাজ
ইচ্ছা
অনুযায়ী
জান্নাতে
সমস্ত কাজ জান্নাতীদের ইচ্ছা
অনুযায়ী চোখের পলকে সুসম্পন্ন হয়ে
যাবে: জান্নাতের নেয়ামতসমূহ জান্নাতীদের মন ও দৃষ্টিকে
শান্ত করবে; পৃথিবীতে জান্নাতের নেয়ামত সম্পর্কে কল্পনা করাও সম্ভব নয়
জান্নাতের বর্ণনা
মাসআলা-
জান্নাতের নেয়ামত এবং তার বৈশিষ্ট্য
হুবহু বর্ণনা করা ও পৃথিবীতে
তা মানুষকে বুঝানো তো দূরের কথা
এমন কি তার কল্পনাও
অসম্ভব
জান্নাতের বৈশিষ্ট্য
বর্ণনা
এরপর
শেষে বললেন: তাতে রয়েছে এমন
জিনিস যা কোন দিন
কোন চক্ষু দেখে নি, কোন
কান কোন দিন এ
ব্যাপারে কোন কিছু শোনে
নি। মানুষের অন্তরেও এ ব্যাপারে কোন
দিন কোন চিন্তা জাগে
নি।
অতপর
পাঠ করলেন: “তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে।
আর তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও
আশায় এবং আমি তাদেরকে
যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে তারা
ব্যয় করে। কেউ জানে
না তার কৃতকর্মের নয়ন-প্রিতিকর কি কি প্ৰতিদান
লুকায়িত আছে। (মুসলিম ৪/২৮২৫) ও
(সূরা সাজদা-১৭)
মৃত্যুর পরের
অনন্ত
জীবন
মাসআলা-
জান্নাতে লাঠি পরিমাণ স্থানও
পৃথিবী ও পৃথিবীতে বিদ্যমান
সমস্ত সম্পদের চেয়ে উত্তম:
মাসআলা- জান্নাতে কামান বরাবর স্থান দুনিয়ার সবকিছু যাতে সূর্য উদিত
ও অস্তমিত হয় তা থেকে
উত্তম
মাসআলা- জান্নাতের নেয়ামতসমূহ থেকে কোনো একটি
নেয়ামত নখ পরিমাণ যদি
এ দুনিয়ায় প্রকাশিত হয় তাহলে আকাশ
ও যমীন আলোকিত হয়ে
যাবে:
জান্নাতে যদি
মৃত্যু
থাকতো
তাহলে
মাসআলা- জান্নাতে যদি মৃত্যু থাকতো
তাহলে জান্নাতীরা জান্নাতের নেয়ামতসমূহ দেখে আনন্দে মৃত্যুবরণ
করতো:
অর্থ:
“আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন: কিয়ামতের
দিন মৃত্যুকে সাদা কাল রং
বিশিষ্ট বকরীর ন্যায় জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে
উপস্থিত করে, তাকে যবাই
করা হবে। জান্নাতী ও
জাহান্নামীরা এ দৃশ্য অবলোকন
করবে। যদি আনন্দে মৃত্যুবরণ
করা সম্ভব হতো তাহলে জান্নাতীরা
আনন্দে মৃত্যুবরণ করতো। আর যদি দুঃখে
মৃত্যুবরণ করা সম্ভব হত
তাহলে জাহান্নামীরা দুঃখে মৃত্যুবরণ করতো। (তিরমিযী ৪/২৫৫৮)
জান্নাতের সুঘ্রাণ
জান্নাতের
সুঘ্রাণ চল্লিশ বছরের দূরত্বের রাস্তা থেকে পাওয়া যাবে
বলে হাদীসে পাওয়া গেছে।
জান্নাতের সবকিছু
দুনিয়ার
থেকে
উত্তম
মাসআলা- জান্নাতের সবকিছু দুনিয়ার সব কিছু থেকে
উত্তম এবং উন্নত হবে।
শুধু নামের দিক থেকে এক
রকম হবে:
অর্থ:
“ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: জান্নাতের কোনো জিনিস শুধু
নাম ব্যতীত, দুনিয়ার কোনো জিনিসের অনুরূপ
নয়”। (আবু নুআইম)
দুঃখ-কষ্টে
অতিক্রম
কারী
ব্যক্তি
জান্নাতে
মাসআলা- জীবন ব্যাপী দুঃখ-কষ্টে অতিক্রম কারী ব্যক্তি জান্নাতে এক পলক চোখ পড়া মাত্র দুনিয়ার সমস্ত দুঃখ-কষ্টের কথা ভুলে যায় অতঃপর জান্নাতীদের মধ্য থেকে এমন এক ব্যক্তিকে আনা হবে, যে দুনিয়াতে জীবন ব্যাপী দুঃখ-কষ্ট ভোগ করেছে। অতঃপর তাকে ক্ষণিকের জন্য জান্নাতে দিয়ে আবার বের করে আনা হবে এবং জিজ্ঞেস করা হবে হে ইবনে আদম!
তুমি কি কখনো কোনো দুঃখ-কষ্ট দেখেছো? তোমার জীবনে কি কোনো দুঃখ কষ্ট এসেছিল? সে বলবে: হে আমার প্রভু! তোমার কসম কখনো তা আসে নি। আমি কখনো কোনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করিনি।” (মুসলিম ৪/২৮০৭)
জাহান্নামে দিয়ে
আবার
বের
করে
আনা
হবে
অর্থ:
“আনাস বিন মালেক (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেছেন: কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্য
থেকে এমন এক ব্যক্তিকে
আনা হবে, যে দুনিয়াতে
অত্যন্ত আরাম-আয়েশের সাথে
জীবন যাপন করেছে।
অতঃপর
তাকে ক্ষণিকের জন্য জাহান্নামে দিয়ে
আবার বের করে আনা
হবে, এরপর তাকে জিজ্ঞেস
করা হবে যে, হে
আদম সন্তান! তুমি কি দুনিয়াতে
কোনো সুখ-শান্তি দেখেছো?
তুমি কি কোনো নেয়ামত
ভোগ করেছো? সে বলবে: হে
আমার প্রভু! তোমার কসম কখনো না।
জান্নাতের নেয়ামত
দেখার
পর
জান্নাতী
অর্থ:
“মুয়ায (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: জান্নাতীরা
কোনো জিনিসের প্রতি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করবে না তবে
শুধু ঐ সময়ের জন্য
যে সময়টি তারা (দুনিয়াতে) আল্লাহর স্মরণে ব্যয় করে নি”।
(ত্বাবারানী
পোস্ট ট্যাগঃ