জান্নাতে মানুষের বয়স কত হবে
জান্নাতে মানুষের বয়স কত হবে
জান্নাতীবাসীদের
বয়স যে কত হবে সে ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের মতামত আছে হাদীস শরিফে। তবে বেশিরভাগ হাদিসে
আছে জান্নাতীদের বয়স হবে ৩৩
বছর। সে হিসেবে এটাই
সঠিক বলে প্রতিয়মান হয়ে থাকে। মূলত জান্নাতীগণ ৩৩ বছরের যুবক হয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করবে।
বিনা হিসাবে
জান্নাত
লাভ
কোনো
প্রকার হিসাব নিকাশ ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ কারীদের দরজার নাম “বাব আইমান”। (হে আল্লাহ
তুমি তোমার দয়া ও অনুগ্রহে
আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো)
আল্লাহপাক
বলবেন: হে নবী তোমার
উম্মতের মধ্য থেকে ঐ
সমস্ত লোকদেরকে আইমান দরজা দিয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করাও যাদের কোনো
হিসাব- নিকাশ নেই।
জান্নাতের সবচেয়ে
বড়
দরজার
দূরত্ব মক্কা ও
হিজর
আর
তারা অন্য লোকদের সাথেও
শরীক আছে যারা জান্নাতের
অন্যান্য দরজা দিয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করবে। (অর্থাৎ তারা যদি অন্য
কোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করতে চায় তাহলে
তাও তারা করতে পারবে)
কসম ঐ সত্তার যার
হাতে মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রাণ। জান্নাতের দু'টি চৌকাঠের
মাঝের দূরত্ব হলো মক্কা ও
হিজর (বাহরাইনের একটি শহরের নাম)
এর দূরত্বের সমান। বা তিনি বলেছেন,
মক্কা ও বাসরার দূরত্বের
সমান।” (মুসলিম ১৯৪)
নোট:
মক্কা-হিজরের মাঝের দূরত্ব হলো ১১৬০ কি.মি। আর মক্কা
বাসরার মাঝের দূরত্ব হলো ১২৫০ কি.
মি।
জান্নাতের দরজার
নাম
সমূহ
আইমান
কোনো
প্রকার হিসাব ব্যতীত সত্তর হাজার লোক এক সাথে
আইমান
নামক দরজা দিয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করবে অথচ কেউ
সামনে পিছনে হবে না:
অর্থ:
“সাহাল বিন সা'দ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমার
উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার লোক বা সাত
লক্ষ লোক বর্ণনাকারী আবু
হাজেম সঠিকভাবে জানেন না যে, রাসূল
সাঃ কোনো সংখ্যাটির কথা
বলেছেন। তারা একে অপরের
হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ
করবে,
জান্নাতীদের বৈশিষ্ট্য
তাদের
সর্বপ্রথম ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ
না তাদের সর্বশেষ ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করে। (অর্থাৎ তারা সবাই একই
সাথে একবারে জান্নাতে প্রবেশ করবে) ঐ জান্নাতীদের
চেহারা
১৪ তারিখের রাতের চাঁদের ন্যায় চমকাতে থাকবে। (মুসলিম ২১৯)
নোটঃ
মুসলিমের বর্ণনায় এক হাদীসে সত্তর
হাজারের কথা বর্ণিত হয়েছে।
(এর সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে
একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন)
কালিমা শাহাদাত পাঠ ওযু
করার
পর
ভাল
করে ওযু করার পর
কালিমা শাহাদাত পাঠকারী
ব্যক্তি জান্নাতের আট দরজার মধ্য
থেকে যে কোনো দরজা
দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে:
অর্থ:
“ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি ভাল
করে ওযু করে এর
পর কালেমা
শাহাদাত
পাঠ
করবে সে জান্নাতের আট দরজার মধ্য
দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।
জান্নাতের যেকোনো
দরজা
দিয়ে
জান্নাতে
রীতিমত
পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়কারী, রমযানে রোযা পালনকারিনী, সতী,
স্বীয় স্বামীর আনুগত্যশীল নারী জান্নাতের আট
দরজার মধ্য থেকে যে
কোনো দরজা দিয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করতে পারবে:
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: যে
মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায
যথাযথভাবে আদায় করে, রমযানে রোযা
রাখে, লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে, স্বীয় স্বামীর
অনুগত থাকে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা
হবে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে
খুশি তা দিয়ে তুমি
জান্নাতে প্রবেশ করো।” (ইবনে হিব্বান ৪২৬৩)
ধৈর্য নিয়ে হাদিস সন্তানের
মৃত্যুতে
ধৈর্যধারণকারী
ব্যক্তি
জান্নাতে
মাসআলা-
৯৪: তিনজন অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের মৃত্যুতে ধৈর্যধারণকারী ব্যক্তি জান্নাতের আট দরজার মধ্য
থেকে যে কোনো এক
দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে?
অর্থ:
“আনাস বিন মালেক (রা)
নবী সাঃ থেকে বর্ণনা
করেছেন, তিনি বলেন: যে
মুসলমান ব্যক্তির তিনজন নাবালেগ সন্তান মৃত্যুবরণ করলো (আর সে তাতে
ধৈর্যধারণ করলো) সে জান্নাতের আট
দরজাতেই তাদের সাক্ষাৎ লাভ করবে এবং
এর যে দরজা দিয়ে
খুশি তা দিয়েই সে
জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” (ইবনে
মাজা)
সোম ও
বৃহস্পতিবার
দিন
জান্নাতের
দরজা
খোলা
থাকে
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: সোম
ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং
প্রত্যেক ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা
করা হয়, যে আল্লাহর
সাথে শিরক করে নি।
কিন্তু ঐ ব্যক্তি ব্যতীত
যে তার জন্য কোনো
ভাইয়ের সাথে হিংসা রাখে।
(তাদের উভয়ের সম্পর্কে) ফেরেশতাকে বলা হয় যে,
তাদের জন্য অপেক্ষা কর
যাতে তারা পরস্পরে মিলিত
হয়ে যায়।” (মুসলিম ২৫৬৫)
রমজানে মাস
ব্যাপী
জান্নাতের
দরজা
খোলা
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: যখন
রমযান আসে তখন আকাশের
দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়,
আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া
হয় এবং শয়তানকে জিঞ্জিরাবদ্ধ
করা হয়।” (মুত্তাফাকুন আলাইহি)
পোস্ট ট্যাগঃ