যেনাকারী কি জান্নাতে যাবে
যেনাকারী কি জান্নাতে যাবে
যেনাকারী
ব্যক্তি জান্নাতে
যাবে কিনা আসলে যেনা অনেক বড় একটা পাপের কাজ ও কবিরা গুনাহ
বলে শরীয়তে পাওয়া যায়। আর
যেনা যেনা কবিরা গুনাহ হওয়ার কারণে কবিরা গুনাহকারীর জন্য আল্লাহপাক জাহান্নামকে ঠিকানা
হিসেবে রেখেছেন। তাই সে জাহান্নামে যাবে বলে বিবেচিত। তবে কেউ যদি খাস দিলে তওবা করে
যেনা করার পর যে আর জীবনে কোনোদিন যেনা করবে না তাহলে তা ভিন্ন কথা।
যেনা অর্থ কি
যেনা বলতে বুঝায় একজন অবিবাহিত নারী বা পুরুষ মানুষ
যদি অন্য কোনো নারী বা পুরুষের সাথে বিবাহ ছাড়া যৌন মিলন করে ফেলে
তাহলে সেটাকেই বলা হয়
যেনা। আবার যদি একজন বিবাহিত নারী বা পুরুষ মানুষ
যদি অন্য কোনো বিবাহিত নারী
বা পুরুষের সাথে যৌন মিলন করে ফেলে
তাহলে সেটাকেও বলা হয়
যেনা।
যেনা কত
প্রকার
যেনা
বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে যেমনঃ চোখের যেনা, মনের যেনা, দেহের যেনা ইত্যাদি। ইসলামে
শরিয়তে যেনা একটি অবৈধ হারাম কাজ যা যেনা খুবই বড় ধরনের পাপ
কাজ বলে বিবেচিত। যেনা করা একটি
গর্হিত কার্য। যেনাকারী কখনো পৃথীবিতে সুখী হতে পারে না। যেনাকরী দুনিয়ায় শাস্তি পেয়ে থাকে।
এবার
যেনাকারীর ব্যাপারে জানার পর আমরা জানবো জান্নাতের নিয়ামতসমূহ বা জান্নাতের ফলসমূহের
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।
জান্নাতের ফলসমূহ
জান্নাতের
গাছের নাম
জান্নাতের
ফল জান্নাতীদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে
থাকবে:
জান্নাতে
মৌসুমী প্রত্যেক ফল সর্বদাই থাকবে:
জান্নাতের
ফল ভোগ করার জন্য
কারো নিকট থেকে অনুমতি
নিতে হবে না।
জান্নাতের
ফলের মজুদ কখনো শেষে
হবে না:
জান্নাতের
ফল কখনো নষ্ট হবে
না:
(মহান
আল্লাহর নিকট এ কামনা
করি যেন তিনি স্বীয়
দয়া ও অনুগ্রহে আমাদেরকে
তা খাওয়ার তাওকীক দান করেন)
কলা ও
বরই
এর উপকারিতা জান্নাতের ফল
অর্থ:
“যারা মুত্তাকী এটা তাদের কর্মফল,
আর কাফিরদের কর্মফল অগ্নি।” (সূরা রাআদ: ৩৫)
জান্নাতীর পছন্দ
মতো
সর্বপ্রকার
ফল
জান্নাতে
প্রত্যেক জান্নাতীর পছন্দ মতো সর্বপ্রকার ফল
মূল মজুদ থাকবে:
অর্থ:
নিশ্চয় মুত্তাকীরা থাকবে ছায়া ও ঝর্ণাবহুল স্থানে,
আর নিজেদের বাসনানুযায়ী ফলমূল-এর মধ্যে। (তাদেরকে
বলা হবে)
জান্নাতের ফল
সর্বদা
জান্নাতীদের
নাগালের
মধ্যে
মাসআলা-১৫০: জান্নাতের ফল
সর্বদা জান্নাতীদের নাগালের মধ্যে থাকবে, দাড়িয়ে, বসে, চলা ফিরা
করা অবস্থায়, যখন খুশি তখনই
তা তারা ভক্ষণ করতে
পারবে:
জান্নাতের খেজুর
মাসআলা-১৫১: জান্নাতের খেজুর
মটকা বা বালতির মত
হবে যা দুধ থেকেও
সাদা, মধু থেকেও মিষ্টি,
মাখন থেকেও নরম:
জান্নাতের ফলের
শীষ
এতো
বড়
হবে
যে
মাসআলা-১৫২: জান্নাতের ফলের
শীষ এতো বড় হবে
যে, তা যদি পৃথিবীতে
আসতো তাহলে সাহাবাগণ কিয়ামত পর্যন্ত তা খেয়ে শেষ
করতে পারত না
তিনি
বললেন: আমি জান্নাত দেখছিলাম
আর তার একটি শীষ
নিতে চাইলাম, কিন্তু যদি আমি তা
নিতাম তাহলে তোমরা যত দিন দুনিয়ায়
থাকতে ততদিন তোমরা তা খেতে পারতে।”
(বুখারী ১/৭৪৮)
মাসআলা-১৫৩: জান্নাতের একটি
শীষ যদি পৃথিবীতে আসতো
তাহলে আকাশ ও যমীনের
সমস্ত মাখলুক তা খেয়ে শেষ
করতে পারতো না: 'কিতাব সালাতিল
খুসুফ
জান্নাতি ফল কোনটি
অতএব
খাও, আনজীর
অশ্বরোগের
ঔষধ,
আর
তা
গ্রন্থির
ব্যাথা
দূর
করে।
(ইবনে কায়্যিম তার তিব্বুনন্নবুবীতে তা
উল্লেখ করেছেন)
জান্নাতি ফল কোনটি
জান্নাতী যখন
কোনো
বৃক্ষের
ফল
পাড়বে
মাসআলা-১৫৭: জান্নাতী যখন
কোনো বৃক্ষের ফল পাড়বে তখন
সাথে সাথে ওখানে আরেকটি
নতুন ফল হয়ে যাবে:
অর্থ:
“সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ সাঃ বলেছেন: যখন
কোনো ব্যক্তি জান্নাতের কোনো ফল পাড়বে
তখন তার স্থলে অন্য
একটি ফল হয়ে যাবে।”
(ত্ববারানী)
জান্নাতের নদীর নাম
জান্নাতে
সুস্বাদু পানি, সুস্বাদু দুধ, সুমিষ্ট শরাব
এবং স্বচ্ছ মধুর নদী প্রবাহিত
হচ্ছে:
মাসআলা-১৫৯: জান্নাতের নদীসমূহের
পানীয়র রং ও স্বাদ
সর্বদা একই রকমের থাকবে:
অর্থ:
“যাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: আমার সামনে জান্নাত
ও তাতে বিদ্যমান সমস্ত
নিআমত পেশ করা হলো,
ফল-ফুল, সবুজ সজিব
জিনিসসমূহ। আমি তোমাদের জন্য
ওখান থেকে আঙ্গুরের একটি
থোকা নিতে চাইলাম, কিন্তু
আমাকে থামিয়ে দেয়া হলো,
যদি
ঐ থোকাটি তোমাদের জন্য নিয়ে আসতাম
তা হলে আকাশ ও
যমীনের সমস্ত সৃষ্টি জীব যদি তা
খেত তাহলে তা খেয়ে শেষ
করতে পারতো না।” (আহমদ)
জমজম কূপের ইতিহাস
নোট:
জান্নাতের নিআমত সম্পর্কে বর্ণিত এ সমস্ত হাদীস
অন্তত মুসলমানদের জন্য কোনো আশ্চার্য
বিষয় নয়। যারা গত
ছয় হাজার বছর থেকে জমজম
কূপকে প্রবাহিত হতে দেখে আসছে,
যা থেকে সমস্ত পৃথিবীর
মানুষ উপকৃত হচ্ছে, রমযান ও হজ্জ এর
সময় সমস্ত মানুষ প্রত্যেক ব্যক্তি স্ব-চোখে তা
অবলোকন করে,
লোকেরা
শুধু আত্মতৃপ্তির সাথে তা পান
করে তাই নয়, বরং
স্ব স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তন
কালে বাধাহীনভাবে যার যত খুশি
সে তত পরিমাণে নিয়ে
যাচ্ছে। কিন্তু এরপরও পানির মধ্যে কখনো কোনো কমতি
হচ্ছে না বা শেষও
হচ্ছে না৷ আর কিয়ামত
পর্যন্ত এ পানি এভাবেই
ব্যবহৃত হতে থাকবে। (সুবহানাল্লাহি
ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম)
জান্নাতি ফল কোনটি
জান্নাতের
ফল খেজুর, আনার ও আঙ্গুর আনজীর
জান্নাতী ফল; জান্নাতের সমস্ত
ফল আটিহীন হবে:
জান্নাতের নদীর নাম
জান্নাতের
নদীঃ সাইহান, জাইহান, ফোরাত, নীল
অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন: সাইহান, জাইহান, ফোরাত, ও নীল জান্নাতের
নদী। (মুসলিম ৪/২৮৩৯)
কাওসার কি
মাসআলা-১৬১: কাওসার জান্নাতের
নদী যার পানি দুধ
থেকেও সাদা এবং মধু
থেকেও অধিক মিষ্টি হবে:
মাসআলা-১৬২: কাওসার আল্লাহর
পক্ষ থেকে রাসূল আঃ
কে দেয়া উপহার
কাওসার নামের অর্থ কি
এ
হলো একটি নদী যা
আমাকে আমার আল্লাহ জান্নাতে
দিবেন। যার পানি দুধের
চেয়েও সাদা হবে, মধুর
চেয়েও মিষ্টি হবে এবং সেখানে
এমন পাখি থাকবে যাদের
গর্দান হবে উটের ন্যায়।
ওমর
(রাঃ) বলেছেন: ঐ পাখীরা খুব
আনন্দে আছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন:
ঐ পাখীগুলোকে ভক্ষণকারী আরো আনন্দে আছে।”
(তিরমিযী ৪/২৫৪২)
পোস্ট ট্যাগঃ