জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: সমস্ত জাহান্নামবাসী জান্নাতে তার ঠিকানা দেখতে
পাবে, আর আফসোস করে
বলবে: হায়! আল্লাহ যদি আমাকে হিদায়াত
প্রাপ্ত করতেন! তা দেখা তাদের
জন্য আফসোসের কারণ হবে।
আর
প্রত্যেক জান্নাতীকে জাহান্নামে তার ঠিকানা দেখানো
হবে। তখন সে বলবে:
যদি আল্লাহ আমাকে হিদায়াত না দিত (তাহলে
আমাকে সেখানে যেতে হত) তা
দেখা হবে তার জন্য
কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কারণ। এরপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তেলাওয়াত করলেন:
হায়! আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে আমি
যে শৈথিল্য করেছি তার জন্য আফসোস!”
(হাকেম ২/৩৬২৯)
জাহান্নামীদের সুযোগ
লাভের
আকাঙ্খা
কাফির
আগুন দেখে সত্যকে স্বীকার
করবে আর সৎ আমল
করার জন্য দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে
ফিরে আসার জন্য আকাঙ্খা
করবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
তারা কি শুধু তার
পরিণামের অপেক্ষা করছে? যেদিন তার পরিণাম প্রকাশ
হবে, তখন পূর্বে যারা
তাকে ভুলে গিয়েছিল, তারা
বলবে, ‘আমাদের রবের রাসূলগণ তৌ
সত্য নিয়ে এসেছিলেন। সুতরাং আমাদের জন্য কি সুপারিশকারীদের
কেউ আছে, যে আমাদের
জন্য সুপারিশ করবে,
কিংবা
আমাদের প্রত্যাবর্তন করানো হবে, অতঃপর আমরা
যা করতাম তা ভিন্ন অন্য
আমল করব'? তারা তো নিজদেরকে
ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তারা যে
মিথ্যা রটাত, তা তাদের থেকে
বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। (সূরা
আরাফ ৫৩)
জাহান্নাম থেকে
মুক্তি
পেয়ে
ভাল
আমল
জাহান্নাম
থেকে মুক্তি পেয়ে আগামীতে ভাল আমল করার
দরখাস্তের ব্যাপারে জাহান্নামের পাহারাদারের কড়া কড়া উত্তর”
যালিমদের জন্য এখানে কোনো
সাহায্যকারী নেই:
জাহান্নামের আজাব
আরবির বাংলা অর্থ:
আর সেখানে তারা আর্তনাদ করে
বলবে, 'হে আমাদের রব!
আমাদেরকে বের করে দিন,
আমরা পূর্বে যে আমল করতাম,
তার পরিবর্তে আমরা নেক আমল
করব'। (আল্লাহ বলবেন)
‘আমি কি তোমাদেরকে এতটা
বয়স দেইনি যে, তখন কেউ
শিক্ষাগ্রহণ করতে চাইলে শিক্ষাগ্রহণ
করতে পারত?
আর
তোমাদের কাছে তো সতর্ককারী
এসেছিল। কাজেই তোমরা আজাব আস্বাদন কর,
আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।
(সূরা ফাত্বির ৩৭)
জাহান্নামে মুশরিকদের
অন্যায়
স্বীকার
জাহান্নামে
মুশরিকদের অন্যায় স্বীকার ও সুযোগ হলে
মু'মিন হওয়ার আকাঙ্খা
আরবির বাংলা অর্থ: অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টকারীদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, আর ইবলীসের সকল সৈন্যবাহিনীকে। সেখানে পরস্পর ঝগড়া করতে গিয়ে তারা বলবে, 'আল্লাহর কসম!
সর্বদা জাহান্নামের
স্বাদ
গ্রহণ
কর
আল্লাহর
সামনে লজ্জিত হয়ে কাফির ঈমান
আনার অঙ্গিকার করে দ্বিতীয় বার
পৃথিবীতে আসার আবেদন জানাবে
উত্তরে বলা হবে: তোমাদের
কৃতকর্মের বদলা হিসেবে তোমরা
সর্বদা জাহান্নামের স্বাদ গ্রহণ কর:
আমি
ইচ্ছা করলে প্রত্যেককে সঠিক
দিক নির্দেশ দিতাম; কিন্তু আমার এ উক্তি
অবধারিত সত্য যে, আমি
জ্বিন ও মানব সকলকে
দিয়ে অবশ্যই জাহান্নাম পূর্ণ করব। অতএব এ
দিবসকে ভুলে যাওয়ার কারণে
তোমরা মজা আস্বাদন কর।
আমিও তোমাদেরকে ভুলে গেলাম, তোমরা
তোমাদের কৃতকর্মের কারণে স্থায়ী আজাব ভোগ কর
। (সূরা সাজদা ১২-১৪)
আগুনের আজাব
দেখে
কাফির
আগুনের
আজাব দেখে কাফির একবার
সুযোগ পেয়ে সৎ হয়ে জীবন
যাপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ
করবে কিন্তু তা পুরণ হবে
না:
আরবির বাংলা অর্থ:
অথবা আজাব প্রত্যক্ষ করার
সময় যাতে কাউকে একথাও
বলতে না হয়, “যদি
একবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ
আমার হত, তাহলে আমি
মু'মিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম'। হ্যাঁ,
অবশ্যই তোমার কাছে আমার নিদর্শনাবলী
এসেছিল, অতঃপর তুমি সেগুলোকে অস্বীকার
করেছিলে এবং তুমি অহঙ্কার
করেছিলে। আর তুমি কাফিরদের
অন্তর্ভুক্ত ছিলে। (সূরা যুমার ৫৮-৫৯)
জাহান্নামী আল্লাহর
সামনে
জাহান্নাম
থেকে
জাহান্নামী
আল্লাহর সামনে জাহান্নাম থেকে বের
হওয়ার জন্য ঈমান আনার ব্যাপারে ওয়াদা করবে উত্তরে আল্লাহর পক্ষ থেকে কঠিনভাবে
ধমক দেয়া হবে:
জাহান্নামের
আজাব দেখে দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে
ফিরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ:
আরবির বাংলা অর্থ:
আর তুমি যালিমদেরকে দেখবে,
যখন তারা আজাব প্রত্যক্ষ
করবে তখন বলবে, “ফিরে
যাওয়ার কোনো পথ আছে
কি'? তুমি তাদেরকে আরো
দেখবে যে, তাদেরকে অপমানে
অবনত অবস্থায় জাহান্নামে উপস্থিত করা হচ্ছে, তারা
আড় চোখে তাকাচ্ছে।
আর
কিয়ামতের দিন মু'মিনগণ
বলবে, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত যারা
নিজেদের ও পরিবার-পরিজনের
ক্ষতি সাধন করেছে। সাবধান!
যালিমরাই থাকবে স্থায়ী আযাবে। (সূরা শুরা ৪৪-৪৫)
কঠিন
শাস্তিতে নিমজ্জিত মুজরিমদের আবেদন “হে আমাদের প্রভু!
একবার একটু আজাব দূর
করুন আমরা ঈমান আনব”
আরবির বাংলা অর্থ:
(তখন তারা বলবে) 'হে
আমাদের রব! আমাদের থেকে
আজাব দূর করুন; নিশ্চয়
আমরা মু'মিন হব।'
এখন কীভাবে তারা উপদেশ গ্রহণ
করবে, অথচ ইতঃপূর্বে তাদের
কাছে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনাকারী রাসূল এসেছিল?
তারপর
তারা তাঁর দিক থেকে
বিমুখ হয়েছিল এবং বলেছিল 'এ
শিক্ষাপ্রাপ্ত পাগল'। নিশ্চয়
আমি ক্ষণকালের জন্য আজাব দূর
করব; নিশ্চয় তোমরা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। সেদিন
আমি প্রবলভাবে পাকড়াও করব; নিশ্চয় আমি
হব প্রতিশোধ গ্রহণকারী । (সূরা দুখান
১২-১৬)
ইবরাহিম (আ)-এর
পিতা
জাহান্নাম
দেখে
বলবে
ইবরাহিম
(আ)-এর পিতা আর
জাহান্নাম দেখে বলবে: হে
ইবরাহিম! আজ আমি তোমার
কথা শুনব কিন্তু তখন
ইবরাহিম (আ) এর পিতাকেও
সুযোগ দেয়া হবে না বরং
জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন,
তিনি বলেন: ইবরাহিম (আ) কিয়ামতের দিন
তাঁর পিতাকে এমনভাবে দেখতে পাবে যে, তার
মুখে কাল ও ধুলাময়,
তখন ইবরাহিম (আ) বলবেন: আমি
কি পৃথিবীতে তোমাকে বলি নাই যে,
আমার কথা অমান্য করবে
না?
আযর
বলবে: আচ্ছা আজ আমি তোমার
কথা অমান্য করব না। তখন
ইবরাহিম (আ) স্বীয় রবের
নিকট আবেদন করবে যে, হে
আমার রব! তুমি আমাকে
ওয়াদা দিয়েছিলে যে, কিয়ামতের দিন
আমাকে অপমানিত করবে না কিন্তু
এর চেয়ে বড় অপমান আর
কি হতে পারে যে,
আমার পিতা তোমার রহমত
থেকে বঞ্চিত।
আল্লাহ
বলবেন: হে ইবরাহিম! তোমার
উভয় পায়ের নিচে কি? ইবরাহিম
(হঠাৎ) দেখবেন আবর্জনার সাথে মিসা এক
মূর্তি যাকে ফেরেশতারা পদাঘাত
করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করছে।" (বুখারী ৩৩৫০)
জাহান্নামে ইবলীস
জাহান্নামে
প্রবেশের পর ইবলীস তার
অনুসারীদেরকে লক্ষ্য করে বক্তব্য দিবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
আর যখন যাবতীয় বিষয়ের
ফায়সালা হয়ে যাবে, তখন
শয়তান বলবে, “নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলেন সত্য ওয়াদা, তোমাদের
উপর আমার কোনো আধিপত্য
ছিল না, তবে আমিও
তোমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছিলাম, এখন আমি তা
ভঙ্গ করলাম।
তোমাদেরকে
দাওয়াত দিয়েছি, আর তোমরা আমার
দাওয়াতে সাড়া দিয়েছ। সুতরাং তোমরা আমাকে ভর্ৎসনা করো না, বরং
নিজদেরকেই ভর্ৎসনা কর। আমি তোমাদের
উদ্ধারকারী নই, আর তোমরাও
আমার উদ্ধারকারী নও। ইতঃপূর্বে তোমরা
আমাকে যার সাথে শরীক
করেছ, নিশ্চয় আমি তা অস্বীকার
করছি। নিশ্চয় যালিমদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক
আজাব' । (সূরা ইবরাহীম
২২)
ইবলীসের দৃষ্টান্তমূলক
শেষ
পরিণতি
কিয়ামতের
দিন সর্বপ্রথম ইবলীসকে আগুনের পোশাক পরানো হবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
“আনাস বিন মালেক (রা)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন: জাহান্নামে সর্বপ্রথম ইবলীসকে আগুনের পোশাক পরানো হবে। তা তার
কপালের ওপর রেখে পিছন
থেকে টানা হবে, তার
সন্তানরা (তার চেলারা) তার
পিছে পিছে চলবে,
ইবলীস
তার মৃত্যু ও ধ্বংস কামনা
করতে থাকবে তার ভক্তরাও মৃত্যু
ও ধ্বংস কামনা করতে থাকবে, এমন
কি যখন সে জাহান্নামের
কাছে এসে উপস্থিত হবে,
তখন ইবলীস বলবে: হায় মৃত্যু! তার
সাথে তার ভক্তরাও বলবে:
হায় মৃত্যু! তখন তাকে বলা
হবে আজ এক মৃত্যু
নয় বহু মৃত্যুকে ডাক!”
(আহমদ ৩৫৯০৭)
জাহান্নামে ভাল
বন্ধুর
তালাশ
আরবির বাংলা অর্থ:
তারা আরো বলবে, 'আমাদের
কী হলো যে, আমরা
যাদের মন্দ গণ্য করতাম
সেসকল লোককে এখানে দেখছি না।' 'তবে কি আমরা
তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র মনে করতাম, নাকি
তাদের ব্যাপারে [আমাদের] দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে'? নিশ্চয় এটি সুনিশ্চিত সত্য-
জাহান্নামীদের এই পারস্পরিক বাকবিতণ্ডা।
(সূরা সোয়াদ ৬২-৬৪)
জাহান্নামে এক
পথভ্রষ্ট
বে-দ্বীন
বন্ধুর
স্মৃতিচারণ
আরবির বাংলা অর্থ:
আর সেদিন যালিম নিজের হাত দু'টো
কামড়িয়ে বলবে, ‘হায়! আমি যদি রাসূলের
সাথে কোনো পথ অবলম্বন
করতাম'! 'হায় আমার দুর্ভোগ,
আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে
গ্রহণ না করতাম'।
'অবশ্যই সে তো আমাকে
উপদেশবাণী থেকে বিভ্রান্ত করেছিল,
আমার কাছে তা আসার
পর। আর শয়তান তো
মানুষের জন্য চরম প্রতারক'। (সূরা ফুরকান
২৭-২৯)
জাহান্নামে নিয়ে
যাওয়ার
আমলসমূহ
আনন্দদায়ক
জাহান্নামকে
আনন্দদায়ক আমলসমূহ দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়েছে:
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি রাসূলূল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন,
তিনি বলেন: যখন আল্লাহ জান্নাত
ও জাহান্নাম সৃষ্টি করেন তখন সেখানে
জিবরাঈলকে জান্নাত দেখতে পাঠালেন এবং তাকে বললেন:
তুমি তা দেখ এবং
তার অধিবাসীদের জন্য কি তৈরী
করে রাখা হয়েছে তা
দেখে আস।
তখন
সে ওখানে গিয়ে তা এবং তার
অধিবাসীদের জন্য 'কি তৈরী করে
রাখা হয়েছে তা দেখল এবং
আল্লাহর নিকট ফিরে আসল,
এসে বলল তোমার ইজ্জতের
কসম! যেই তার কথা
শুনবে সেই সেখানে প্রবেশ
করবে। তখন আল্লাহ নির্দেশ
দিলেন, তখন তাকে কষ্টকর
আমলসমূহ দ্বারা ঢেকে দেয়া হলো।
এর
পর তাকে (জিবরাঈল কে) বললেন: তুমি
সেখানে আবার যাও এবং
তা দেখ এবং তার
অধিবাসীদের জন্য কি প্রস্তুত
করে রেখেছি তা দেখে আস।
তখন সে ওখানে গিয়ে
তা এবং তার অধিবাসীদের
জন্য কি তৈরী করে
রাখা হয়েছে তা দেখল, তখন
দেখল যে, এখন তা
কষ্টকর আমলসমূহ দ্বারা ঢেকে দেয়া হয়েছে।
তখন
সে আল্লাহর নিকট ফিরে এসে
বলল: তোমার ইজ্জতের কসম! আমার ভয়
হচ্ছে যে এখানে কেউ
প্রবেশ করতে পারবে না।
তখন আল্লাহ বললেন: যাও এখন গিয়ে
জাহান্নাম দেখে আস এবং
তা ও তার অধিবাসীদের
জন্য কি প্রস্তুত করে
রেখেছি তা দেখে আস।
তখন
সে ওখানে গিয়ে দেখতে পেল যে, তার
একাংশ আরেক অংশকে গ্রাস
করছে, তখন সে আল্লাহর
নিকট ফিরে আসল এবং
বলল: তোমার ইজ্জতের কসম! যেই এর
কথা শুনবে সেই তাতে প্রবেশ
করতে চাইবে না। তখন তিনি
নির্দেশ দিলেন, ফলে তাকে কামভাবাপন্ন
আমলসমূহ
দ্বারা ঢেকে দেয়া হলো।
এরপর
আল্লাহ তাকে (জিবরাঈল কে) আবার বললেন:
তুমি আবার সেখানে গিয়ে
তা দেখে আস, তখন
সে আবার ওখানে গিয়ে
তা দেখে আসল এবং
বলল: তোমার ইজ্জতের কসম! আমার ভয়
হচ্ছে যে এখানে প্রবেশ
না করে কেউ মুক্তি
পাবে না ।” (তিরমিযী
২৫৬০)
আরবির বাংলা অর্থ:
“আনাস বিন মালেক (রা)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন: জান্নাত কষ্টদায়ক
আমলসমূহ
দ্বারা
ঢেকে
দেয়া
হয়েছে,
আর জাহান্নাম
আরামদায়ক আমলসমূহ দ্বারা
ঢেকে দেয়া হয়েছে।” (মুসলিম ২৮২২)
পৃথিবীর চাকচিক্যতার
পরিণতি
জাহান্নাম
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু মালেক আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) -কে বলতে
শুনেছি, তিনি বলেন: পৃথিবীর
মিষ্টি পরকালের তিক্ত, আর পৃথিবীর তিক্ত
পরকালের মিষ্টি।” (আহমদ, হাকেম ৭৮৬১)
আল্লাহর নাফরমানীমূলক
কাজসমূহ
আনন্দদায়ক
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: পৃথিবী মু'মিনের জন্য
জেল স্বরূপ, আর কাফিরের জন্য
জান্নাত স্বরূপ।” (মুসলিম ২৯৫৬)
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
হার
আদম সন্তানদের
মধ্যে
জান্নাত
ও
জাহান্নামীদের
হার;
হাজারে ১৯৯ জন জাহান্নামে
যাবে
আর
মাত্র
একজন
জান্নাতে
যাবে:
আরবির বাংলা অর্থ:
“আবু সাঈদ (রা) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: আল্লাহ তা'আলা বলেন:
হে আদম! সে বলবে:
হে আল্লাহ! আমি তোমার খেদমতে
ও তোমার অনুসরণে উপস্থিত, সমস্ত কল্যাণ তোমারই হাতে, তখন আল্লাহ বলবেন:
মানুষের মধ্য থেকে জাহান্নামীদেরকে
আলাদা কর।
আদম
(আ) জিজ্ঞেস করবে যে, জাহান্নামী
কতজন? আল্লাহ বলবেন: হাজারে ৯৯৯ জন। নবী
(সাঃ) বলেছেন: আর এটাই হবে
ঐ মুহূর্ত যখন শিশু বৃদ্ধ
হয়ে যাবে, গর্ভধারিনী মহিলা গর্ভপাত করবে, আর তুমি লোকরদেরকে
বেহুশ দেখতে পাবে। অথচ তারা বেহুশ
হবেনা বরং তা হবে
আল্লাহর আযাবের কঠিনত্বের ফল।
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
নবীজির
কথা
বর্ণনাকারী
বলেন: একথা শুনে সাহাবাগণ
পেরেশান হয়ে গেল এবং
বলতে লাগল: হে আল্লাহর রাসূল!
তাহলে আমাদের মাঝে এমন কোনো
ব্যক্তি আছে যে, জান্নাতে
যাবে? তিনি বললেন: সুসংবাদ
গ্রহণ কর। এর মধ্যে
ইয়াজুজ মাজুজের মধ্য থেকে এক
হাজার মানুষ (জাহান্নামে যাবে), আর তোমাদের মধ্য
থেকে একজন।” (মুসলিম ২২২)
জাহান্নামে যাবে
আর
১
ফেরকা
জান্নাতে
যাবে
অর্থ:
“আওফ বিন মালেক (রা)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলূল্লাহ
সাঃ বলেছেন: ইহুদীরা ৭১ দলে বিভক্তি
হয়েছিল, তাদের মধ্যে একটি দল জান্নাতী
আর বাকী ৭০টি দল
জাহান্নামী, নাসারারা ৭২ দলে বিভক্ত
হয়েছিল, তাদের মধ্যে একটি দল জান্নাতী
আর বাকী ৭১ দল
জাহান্নামী।
ঐ
সত্তার কসম যার হাতে
মুহাম্মদের প্রাণ! অবশ্যই আমার উম্মত ৭৩
দলে বিভক্ত হবে এর মধ্যে
৭২ দল জাহান্নামে যাবে,
আর একটি দল জান্নাতে
যাবে। তারা (সাহাবাগণ) জিজ্ঞেস করল ইয়া রাসূলুল্লাহ
সাঃ! তারা কারা? তিনি
বললেন (ইবনে মাজা ৩৯৯২)
জাহান্নামীদের শরীর
জাহান্নামীদের
শরীর হবে ৬০ হাত লম্বা ও প্রশস্ত চওড়া বিশিষ্ট। যাতে শাস্তি দেওয়া সহজ হবে।
জাহান্নামীদের
আলামত
দুনিয়াতে
যারা অন্যায় অপরাধে জড়িয়ে থাকবে, হালাল হারাম বাছবে না, আল্লাহ ও নবী রাসূলের পথে চলবে
না তারাই মূলত জাহান্নামী বলে মনে করতে হবে।
জাহান্নামীদের আর্তনাদ
আযাবের
কঠিনতায় জাহান্নামীরা ভীষণ চীৎকার ও আর্তনাদ করতে থাকবে। (আল-কুরআন ১১/১০৬)
জাহান্নামীদের পরিচয়
পৃথিবীর
কোনো জিনিসই তাদের তৃপ্তি দিতে পারে না,
তাদের খাই খাই, নাই
নাই স্বভাব তাদের বেপরোয়া করে তোলে। নিজের
স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা যেকোনো
পাপে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে।
আল্লাহর বিধি-বিধানের কোনো
তোয়াক্কাই করে না
জাহান্নামের আজাব
জাহান্নামের
আগুনের এক মূর্তি বের
হবে, যার থাকবে দুটি
চোখ; যার দ্বারা সে
দর্শন করবে, দু’টি কান;
যার দ্বারা সে শ্রবণ করবে
এবং যার জিভও থাকবে;
যার দ্বারা সে কথাও বলবে।
জাহান্নাম নিয়ে
উক্তি
রমজান
জাহান্নাম হতে বেঁচে যাওয়ার
ঢাল। আল হাদিস; শয়তানের
অনুসরণকারীর আশ্রয়স্থল হলো জাহান্নাম। সূরা
আল-হিজরঃ ৪২
জাহান্নামের স্তর
কয়টি
জাহান্নামের
স্তর ৭টি যথা জাহীম
("জ্বলন্ত আগুন"), হুতামাহ ("চূর্ণবিচূর্ণকারী"), হাবিয়াহ ("অতল গহ্বর"), লাযা,
সা'ঈর ("উজ্জ্বল অগ্নিকাণ্ড"), সাকার, আন-নার।
জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য
উপসংহার
আজকের পোস্টে আলোচিত হলো জাহান্নামীদের বৈশিষ্ট্য কি? জাহান্নামীদের শাস্তি কি? জাহান্নামীদের চেহারা, জাহান্নামীদের শরীর কেমন হবে, জাহান্নামীদের আর্তনাদ কেমন? জাহান্নামীরা জাহান্নামে কি করবে? জাহান্নামীগণের অসহায়ত্ব ইত্যাদি।
পোস্ট ট্যাগঃ